ভারতে নারীদের অধিকার রক্ষা
ভারতীয় সংবিধানের মধ্যে নারীদের অধিকার রক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। উদাহরণ হিসাবে সমান কাজের জন্য সমান বেতন প্রদান, আইনের দৃষ্টিতে সমতা, রাজনৈতিক সাম্য এবং মর্যাদার ক্ষেত্রে সমতা প্রকৃতির কথা উল্লেখ করা যায়। ভারতীয় নারীদের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় পার্লামেন্ট বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়ন করেছে। এইসব আইনের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হল—
নারীদের অশালীনভাবে উপস্থাপন প্রতিরোধ আইন [1986], নারী ও বালিকাদের নীতিবিগর্হিত ক্রয়-বিক্রয় দমন আইন [1956], যৌতুক প্রতিরোধ আইন [1961], শিশু বিবাহ প্রতিরোধ আইন [1978], ধর্ষণ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে ফৌজদারী বিধি সংশোধনী আইন [1983], হিন্দু উত্তরাধিকার আইন [1956], গর্ভপাতসংক্রান্ত আইন [1971], সমবেতন দান সংক্রান্ত আইন, [1976],:পারিবারিক আদালত আইন [1984], সতীপ্রথা নিবারণ আইন [1987], পারিবারিক হিংসা প্রতিরোধ আইন [2002], গর্ভাবস্থায় লিঙ্গ নির্ধারণকারী পরীক্ষা [নিয়ন্ত্রণ নিবারণ] আইন [1994] প্রভৃতির কথা উল্লেখ করা যায়।
তাছাড়া 1990 সালে প্রণীত “নারীদের জন্য জাতীয় কমিশন আইন” অনুযায়ী ভারতীয় সংবিধান এবং নারীদের বিষয়ে প্রণীত বিভিন্ন আইনে নারীদের জন্য যে সব রক্ষাকবচ এর ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেগুলি যথাযথ ভাবে কার্যকর হচ্ছে কিনা তা তদন্ত করা, পরীক্ষা করে দেখা এবং পুনর্বীক্ষণ করার জন্য “একটি জাতীয় কমিশন” নিয়োগ করা হয়েছে।
এছাড়াও 1992 সালে প্রণীত 73 ও74 তম সংবিধান সংশোধনী আইন অনুসারে যথাক্রমে পঞ্চায়েত ও পৌরসভাগুলিতে 33% আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এইসব ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, স্বাধীনোত্তর ভারতে ‘নারীদের মানবাধিকার’ রক্ষার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সর্বোপরি সাম্প্রতিক কালে নারীবাদীরা নারীদের স্ব-মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার উদ্দেশ্যে উপরের উল্লেখিত আইনগুলিকে ব্যবহার করে নারীদের ওপর নানা ধরনের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের চেষ্টা করছে এবং এই প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে সামিল হওয়ার জন্য জনসাধারণকে আহ্বান জানিয়েছে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .