প্রাচীন রাজাগণ তাদের শাসনকাল পর্কিত বিভিন্ন বিষয় তামা, লােহা, রুপা, ব্রোঞ্জ, পাথর বা মাটির ফলকে লিখে রাখতেন। এগুলি শিলালিপি নামে পরিচিত। এগুলি থেকে রাজার নাম, বংশাবলি, সময়কাল, সাম্রাজ্য বিস্তার, ধর্মবিশ্বাস, প্রশাসন, ব্যক্তিগত গুণাবলি ও অন্যান্য বিষয়গুলি সম্পর্কে জানা যায়। আবার তৎকালীন সমাজ, ব্যাবসাবাণিজ্য, ভূমিব্যবস্থা সম্পর্কেও শিলালিপিগুলি থেকে জানা যায়। মৌর্যযুগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায় সম্রাট অশােকের শিলালিপি ও অনুশাসনগুলি থেকে। শিলালিপিতে বিভিন্ন ভাষা ব্যবহার করা হয়। পালি, ব্রাক্ষ্মী, খরােষ্ঠী, সংস্কৃত, তেলেগু, মালয়ালাম, প্রভৃতি ভাষায় প্রাপ্ত প্রধান কয়েকটি শিলালিপি হল সমুদ্রগুপ্তের এলাহাবাদ প্রশস্তি’, চালুক্যরাজ দ্বিতীয় পুলকেশীর ‘আইহােল প্রশস্তি’, কলিঙ্গরাজ খারবেলের ‘হাতিগুম্ফা গুহালেখ’, ভারতীয় ইতিহাসে ভৌগােলিক উপাদান ও তার প্রভাব গৌতমীপুত্র সাতকর্ণীর ‘নাসিক প্রশস্তি’, শশাঙ্কের ‘গঞ্জাম লিপি’, শকক্ষত্রাপ রুদ্রদামনের জুনাগড় প্রশস্তি’ প্রভৃতি। প্রাচীন ভারতের ইতিহাস চর্চায় শিলালিপির গুরুত্ব স্বীকার করে তাই ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেছেন—“Inscriptions, have proved a source of the highest value for re-construction of the political history of ancient India.”

Leave a reply
You must login or register to add a new comment .