বৈশিষ্ট্য ও উৎপত্তি (origin) অনুসারে শিলা তিনপ্রকার, যেমন— আগ্নেয় শিলা, পাললিক শিলা ও রূপান্তরিত বা পরিবর্তিত শিলা। শিলা নির্মাণ ও নানা অর্থনৈতিক কাজে লাগে। পাহাড়, পর্বত, মালভূমি, সমুদ্রের তলদেশ, মহাদেশ সবই শিলা দিয়ে তৈরি।
আগ্নেয় শিলার ভূমিকা
উত্তপ্ত আগ্নেয় পদার্থ শীতল হয়ে যে কঠিন অস্তরীভূত (Unstratified) শিলা তৈরি হয় তা আগ্নেয় শিলা নামে প্রসিদ্ধ। যেমন— ব্যাসল্ট, এ্যানিট, ডায়ােরাইট ইত্যাদি। এ্যানিট ও ব্যাসল্ট শিলা বাড়িঘর, রাস্তাঘাট তৈরির কাজে লাগে। রেললাইনের ধারে ব্যালাস্ট (ballast) দেওয়ার জন্য ব্যাসল্ট শিলার ভাঙা টুকরাে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া, আগ্নেয় । শিলা থেকে সােনা, তামা, হিরে ও নানাবিধ রত্ন পাওয়া যায়।
পাললিক শিলার ভূমিকা
শিলা ক্ষয় হয়ে পলিতে পরিণত হয়। পলি সঞ্চিত হয়ে কালক্রমে স্তরীভূত (stratified) পাললিক শিলা গঠন করে। বেলেপাথর, চুনাপাথর, কয়লা (Coal), ডলােমাইট প্রভৃতি পাললিক শিলার উদাহরণ। সামুদ্রিক প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রস্তরীভূত মৃতদেহকে জীবাশ্ম বা ফসিল (fossil) বলে। পাললিক শিলায় জীবাশ্ম পাওয়া যায়। পাললিক শিলায় আকরিক লােহা পাওয়া যায়। বেলেপাথর দিয়ে বাড়ি তৈরি করা যায়। কয়লাকে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, পাললিক শিলার মধ্যে উদ্ভিদ ও জীবজন্তুর। দেহাবশেষ রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে কয়লা, খনিজ তেল বা পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাসে রূপান্তরিত হয়। কয়লা ও খনিজ তেলকে একত্রে জীবাশ্ম জ্বালানি বা ফসিল ফুয়েল (fossil fuel) বলে। জীবাশ্ম জ্বালানির অতিরিক্ত ব্যবহার পরিবেশ দূষণের সমস্যা সৃষ্টি করে।
রূপান্তরিত শিলার ভূমিকা
আগ্নেয় ও পাললিক শিলার গঠন ও বৈশিষ্ট্য প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে পরিবর্তিত হয়ে রূপান্তরিত শিলায় পরিণত হয় যেমন, এ্যানিট’ নামক আগ্নেয়শিলা রূপান্তরিত হয়ে নিস (gneiss)-এ পরিণত হয়। বেলেপাথর, এক ধরনের পাললিক শিলা, পরিবর্তিত হয়ে কোয়ার্জাইট (quartzite) গঠন করে। রূপান্তরিত শিলা থেকে প্রচুর খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .