Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের গুরুত্ব ও ফলাফল আলােচনা করাে

ভূমিকা :- আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্সসহ ইউরােপের বিভিন্ন দেশের জনগণও নিজ নিজ দেশে একটি বিকল্প রাজনৈতিক আদর্শের সন্ধান পায়। আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রাম তথা আমেরিকার বিপ্লব পরােক্ষ এক নতুন ইউরােপের জন্ম দেয়। আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের ফল ছিল সুদূরপ্রসারী।

আমেরিকার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা যুদ্ধের ফলাফল বা গুরুত্ব

আমেরিকার পক্ষে স্বাধীনতা যুদ্ধের ফল ছিল ইতিবাচক।

(১) নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা :- জনগণের সার্বভৌমত্বের আদর্শকে ভিত্তি করে এই প্রথম সৃষ্টি হয় এক নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা-গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র।

(২) সমাজে নতুন শ্রেণির প্রাধান্য :- আমেরিকার সমাজে অভিজাতদের প্রাধান্য হ্রাস পায়। সেখানে বুর্জোয়ারা এবং উঠতি ব্যবসায়ী ও বিত্তশালীরা প্রাধান্য হ্রাস পায়। সেখানে বুর্জোয়ারা এবং উঠতি ব্যবসায়ী ও বিত্তশালীরা প্রাধান্য লাভ করে।

(৩) অর্থনৈতিক উন্নতি :- আমেরিকার অর্থনীতি নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে বিকাশের সুযােগ পায়। নতুন নতুন শিল্পোদ্যোগ ও ব্যাবসাবাণিজ্যে তারা উৎসাহিত হয়।

(৪) ধর্মাচরণের স্বাধীনতা :- আমেরিকায় অ্যাংলিকান চার্চের প্রাধান্য লুপ্ত হয়ে ধর্মাচরণের পূর্ণ স্বাধীনতা স্বীকৃত হয়।

ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা যুদ্ধের ফলাফল

(১) পার্লামেন্টারি গণতন্ত্র ব্যবস্থা : লর্ড নর্থের নেতৃত্বে গঠিত টোরি-মন্ত্রীসভার পতন ঘটে। পিটের নেতৃত্বে হুইগ দল ক্ষমতায় আসে। পার্লামেন্টের কাছে দায়িত্বশীল থেকে ক্যাবিনেট প্রথায় সরকার গঠিত হলে পার্লামেন্টারি গণতন্ত্রের পথে ব্রিটেন এক ধাপ এগিয়ে যায়।

(২) রাজ ক্ষমতা সংকোচন :- রাজার ক্ষমতা সংকুচিত করা হয়। রাজা কেবল সাংবিধানিক প্রধানে পরিণত হন।

(৩) অর্থনৈতিক সংকট :- আমেরিকা হস্তচ্যুত হওয়ার ফলে বিশ্বে ইংল্যান্ডের মর্যাদা নষ্ট হয় ও ব্রিটিশ অর্থনীতি সংকটগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

(৪) ঔপনিবেশিক নীতির পরিবর্তন :- ইংল্যান্ডের ঔপনিবেশিক নীতিতেও পরিবর্তন।
আসে-মার্কেন্টাইল মতবাদ অর্থাৎ ব্যবসাবাণিজ্যে অত্যধিক গুরুত্বের নীতি পরিত্যক্ত হয়ে সহনশীলতার নীতি গৃহীত হয়।

ফ্রান্সের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা যুদ্ধের ফলাফল 

(১) ফ্রান্সের বুরবো রাজতন্ত্র সপ্তবর্ষব্যাপী যুদ্ধের (১৭৫৬-৬৩ খ্রি.) পরাজয়ের প্রতিশােধ নিতে গিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঔপনিবেশিকদের সাহায্য করায় ফ্রান্স অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখােমুখি হয়। ফলস্বরূপ সম্রাট ষােড়শ লুই স্টেটস জেনারেল আহ্বান করেন।

(২) ঔপনিবেশিকদের সাহায্য করার জন্য লাফেয়েৎ-এর নেতৃত্বে ফরাসি সেনা আমেরিকায় গিয়ে স্বাধীনতার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠে এবং স্বদেশে ফিরে ফরাসিদের মধে গণতান্ত্রিক ভাবধারা প্রচারে ব্রতী হয়। ফলে ফরাসি বিপ্লবের পথ প্রশস্ত হয়।

ইউরােপের অন্যত্র স্বাধীনতা যুদ্ধের ফলাফল

(১) স্পেন ও হল্যাণ্ডে :- স্পেন ও হল্যান্ডের ক্ষেত্রে এই যুদ্ধ মারাত্মক ফল প্রসব করে। এর প্রভাবে আমেরিকায় স্পেনের উপনিবেশগুলিতে স্বাধীনতা সংগ্রাম অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে। অন্যদিকে হল্যান্ডের দেশপ্রেমীরা তাদের রাজতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং তার উপনিবেশ বিস্তারের প্রয়াসকে বন্ধ করে দেয়।

(২) ইতালিতে : ইতালিতে একদল মুক্তিযােদ্ধা আমেরিকার আদর্শে ‘ফিলাডেলফিয়া সমিতি’ নামে একটি গুপ্ত সমিতি গড়ে তুলে স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মনিয়ােগ করে।

(৩) জার্মানি, আয়াল্যান্ড, স্কটল্যান্ডে :- জার্মানি, আয়ার্ল্যান্ড, স্কটল্যান্ড প্রভৃতি দেশ থেকে বহু স্বাধীনচেতা মানুষ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সেখানে বসবাস করতে যায়।

Leave a reply