বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব
বক্সারের যুদ্ধ ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দের ২৩ অক্টোবর অযােধ্যার নবাব সুজা-উদ্-দৌলা, বাদশাহ শাহ আলম এবং বাংলার নবাব মীরকাশিমের সম্মিলিত বাহিনীর সঙ্গে ইংরেজ বাহিনীর হয়েছিল। বক্সারের যুদ্ধে ইংরেজ বাহিনী জয়লাভ করে বাংলায় তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সফল হয়েছিল।
বাংলায় ইংরেজ শক্তির প্রতিষ্ঠার দিক থেকে পলাশির যুদ্ধের তুলনায় বক্সারের যুদ্ধ অধিক গুরুত্বপূর্ণ। স্মিথের মতে, “Plassey war s cannonade but Buxa a decisive battle.” ম্যালেসনের মতে “ভারতের বিভিন্ন যুদ্ধবিগ্রহগুলাের মধ্যে বক্সারের যুদ্ধ হল একটি চূড়ান্ত ফল নির্ণয়কারী যুদ্ধ। বিপানচন্দ্র বক্সারের যুদ্ধকে সর্বাধিক যুগান্তকারী ও তাৎপর্যময় বলে উল্লেখ করেছেন।
বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল
১) বক্সারের যুদ্ধ ছিল ভারতের ইতিহাসে এক নির্ণায়ক যুদ্ধ। এই যুদ্ধের ফলাফল যদি ইংরেজদের প্রতিকূলে যেত তবে ভারতের ইতিহাস অন্যরকমভাবে লেখা হত। এই প্রসঙ্গে র্যামসে মুর তার ‘Making of British India’ গ্রন্থে লিখেছেন “Buxar finally reveted the shakless of company rule upon Bengal.”
২) বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের ফলে বাংলা, বিহার ও ওড়িশায় ইংরেজদের দেওয়ানি লাভ সম্ভব হয়। সুতরাং ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠার দিক থেকে বক্সারের যুদ্ধকে বাংলায় ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থার ভিত্তিপ্রস্থর বলা হয়। বক্সারের যুদ্ধ তথা দেওয়ানি লাভের পর যথার্থভাবে শুরু হয় ইংরেজদের অর্থনৈতিক শােষণ এবং বাংলায় ব্যাবসাবাণিজ্যের উপর। ইংরেজদের একচ্ছত্র আধিপত্যের বিস্তার হয়। এককথায় পলাশির যুদ্ধের ফলে ইংরেজরা যে ক্ষমতা লাভ করেছিল তা পরিপূর্ণতা লাভ করে বক্সারের যুদ্ধের পর। ভারতীয় জনসাধারণ ও ভারতীয় শাসকদের চোখে ইংরেজদের সম্মান অভাবনীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .