Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

নারীশিক্ষা সম্পর্কে রামমোহনের চিন্তা-ভাবনা উল্লেখ কর।

নারীশিক্ষা সম্পর্কে রামমোহনের চিন্তা-ভাবনা উল্লেখ কর।

নারীশিক্ষা সম্পর্কে রামমোহনের চিন্তা-ভাবনা

অন্ধবিশ্বাসী ভারতবাসীর অন্ধত্ব দূর করতে সমাজ সচেতক, দেশপ্রেমিক, নীতিজ্ঞ, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শিক্ষাদীক্ষার সমন্বয় সাধক রামমোহন কুসংস্কারমুক্ত দেশ গড়ার কাজে ব্রতী হয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন পাশ্চাত্য দর্শন, প্রাচ্যের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে নতুন পথের নিশানা দিতে পারবে, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ধারার সমন্বয়ে গড়া ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার স্বচ্ছতা বাড়বে, নতুনত্ব আসবে, প্রাচ্যে বিজ্ঞান মনস্কতার অভাব অনেকাংশে দূর হবে। তাঁর এই স্বাধীন চিন্তাধারা, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি, সমাজ সচেতন, সেদিন মানুষকে নতুন পথের নিশানা দিয়েছিল, সেদিন দেশজুড়ে নব জাগরণের সৃষ্টি হয়েছিল। তাই সমাজসংস্কারক রামমোহনকে ভারতীয় সংস্কৃতির দূত বলা হয়। ওই মহামানবের সমাজসংস্কার সংক্রান্ত কিছু মহান কর্ম তুলে ধরা হল-

সতীদাহ প্রথা

সেকালের কুসংস্কারগুলির মধ্যে একটি হল সতীদাহ প্রথা। স্বামীর জ্বলন্ত চিতায় তুলে দেওয়া হত প্রাণবন্ত স্ত্রীকে। সেদিন স্বামীর মৃত্যুতে নারীজীবনের সব স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটে যেত। ওই মর্মান্তিক, অমানবিক, বর্বরোচিত, পাশবিক নীতিকে ভারতপথিক রামমোহন মেনে নিতে পারেননি। ওই ঘটনায় তাঁর অন্তরাত্মা বারংবার বিচলিত হয়েছিল। জ্বলন্ত চিতায় তুলে দেওয়া চরম অমানবিক কাজ ভেবে রামমোহন রায় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন। ওই প্রতিবাদের ঢেউ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই সামাজিক কুপ্রথার পক্ষে ও বিপক্ষে সেদিন জনগণের মধ্যে বাক্‌বিতণ্ডার সৃষ্টিও হয়েছিল। এমতাবস্থায় সমাজসংস্কারক রামমোহন বজ্রকঠিন মন নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন। ফলে তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলও তিনি পেয়েছিলেন। ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে লর্ড বেন্টিঙ্ক আইন করে ওই সামাজিক কুপ্রথা রদ করেন। ওই ঐতিহাসিক দলিলই নারীজীবনের রক্ষা কবচ।

বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ

নারীমুক্তির অগ্রদূত রামমোহন সেদিন বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন, জনগণের মধ্যে নব চেতনার উন্মেষ ঘটিয়েছিলেন। ঘুণধরা সমাজকে ব্যধিমুক্ত করতে মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন। সামাজিক ব্যধিগুলির কুফল সম্বন্ধে জনগণকে সচেতন করতে সমাজ সংস্কারক রামমোহন তাঁরই সম্পাদিত পত্রিকা—‘সম্বাদ কৌমুদী’-তে নিয়মিত বিজ্ঞানভিত্তিক মতবাদ প্রচার করতেন। তাঁর শুভ প্রচেষ্টা সেদিন সম্পূর্ণরূপে সফল না হলেও জনমানসে এর যে প্রভাব পড়েছিল সে বিষয়ে সন্দেহ নেই, তাঁর ওই প্রয়াস পরবর্তীকালে সামাজিক পরিবর্তনে সাহায্য করেছিল। তাই সমাজ সংস্কারক পূজারি রামমোহন আজও পূজিত হয়ে চলেছেন।

নারীশিক্ষা

নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে সমাজসংস্কারক রামমোহনের অবদান চিরস্মরণীয়। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন নারীশিক্ষা ছাড়া সুস্থ সমাজ গড়ে উঠতে পারে না। তাই সমাজকে নৈতিক অবক্ষয় থেকে মুক্ত করতে তিনি নারীমুক্তি আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। তাঁর ওই শুভ প্রয়াসের ফসল বর্তমান যুগের নারীরা ভোগ করছে।

সম্পত্তিতে নারীর অধিকার

অবলা বলে যে নারী সমাজের বুকে ছিল বঞ্চিতা, যে নারীর পারিবারিক বিষয়সম্পত্তিতে ছিল না কোনো অধিকার, সেই বঞ্চিতা, অবহেলিতা, নিপীড়িতা অবলা নারীর যথাযথ মর্যাদা প্রাপ্তির জন্য ভারতপথিক রামমোহন আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন। আইন প্রণয়নের মাধ্যমে তাঁর সাধনার ফল নারীরা পরবর্তীকালে পেয়েছে।

Leave a reply