পরিবার ও সমাজ রাষ্ট্রের অধীন। পারিবারিক বিশৃঙ্খলা জাতির, সমাজের ও রাষ্ট্রের ঐক্য ক্ষুণ্ন করবে। সুতরাং পরিবারের সকল প্রকার কাজকর্ম ব্যক্তিস্বার্থের উপর ছেড়ে দেওয়া যায় না। বিবাহের সাথে সন্তান উৎপাদন ও তাদের লালন পালনের প্রশ্ন জড়িত আছে। এই শিশু লালন পালন ব্যবস্থা রাষ্ট্রের মধ্যে সংঘটিত হয় এবং এজন্য রাষ্ট্রের উপর দায়িত্ব খানিকটা এসে পড়ে। পারিবারিক প্রথার স্থায়িত্ব রক্ষার জন্য রাষ্ট্রকে কতকগুলি নিয়ম কানুন প্রণয়ন করতে হয়, যথা, বিবাহের বয়স, বিবাহের নিয়ম, বিবাহ বিচ্ছেদের নিয়ম সম্পর্কে আইনগত ব্যবস্থা করতে হয়। সমাজের ও পরিবারের মঙ্গল সাধনের জন্য প্লেটো রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা সমর্থন করেন। এজন্য রাষ্ট্র পরিবারের মঙ্গল সাধনের জন্য প্লেটো রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা সমর্থন করেন। এজন্য রাষ্ট্র পারিবারিক জীবনের বিভিন্ন দিক যথা শিক্ষা, খাদ্য, বাসস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে নিয়ম কানুন প্রণয়ন করে। এইভাবে রাষ্ট্র প্রত্যক্ষভাবে পারিবারিক জীবন নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন পারিবারিক জীবনের সম্পূর্ণটাই কি রাষ্ট্রের অধীন? রাষ্ট্র অতিরিক্ত পরিবারের কোন সত্তা নেই কি? একনায়কতন্ত্রী দেশে প্রতিটি মানুষের জীবনের সব রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত করবার চেষ্টা করে শিক্ষাব্যবস্থা, শিশুর লালন পালন, খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা প্রভৃতি সব কিছুই রাষ্ট্রয়ত্ত অর্থাৎ রাষ্ট্র নেতাদের নির্দেশে করা হয়। এই জাতীয় নিয়ন্ত্রিত পারিবারিক ও সামাজিক ব্যবস্থা কি ভয়াবহ রূপ গ্রহণ করতে পারে তা অডাস্ হাস্কলি তাঁর Brave New World গ্রন্থে দেখিয়েছেন। নিয়ন্ত্রিত সমাজ ব্যবস্থা শেষে পর্যন্ত ভেঙে পড়ে কারণ মানুষের রাষ্ট্র অতিরিক্ত সত্তা আছে—মানুষের জীবনের লক্ষ্য হল তার মধ্যে যে পরমতত্ত্ব সুপ্তভাবে নিহিত আছে তা উপলব্ধি করা, শুধু রাষ্ট্রের যন্ত্র হিসাবে কাজ করা নয়।
যদি পরিবার প্রথা রাষ্ট্রের মধ্যস্থ একটি প্রতিষ্ঠান, তবুও যেহেতু রাষ্ট্র ও পরিবারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ভিন্ন সেজন্য পরিবার কখনও সম্পূর্ণরূপে রাষ্ট্রের অধীন হতে পারে না।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .