দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে এশিয়ার স্বাধীন হওয়া একটি দেশ ছিল ইন্দোনেশিয়া। ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে 1949 খ্রিঃ ইন্দোনেশিয়ায় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে জয়যুক্ত হয় এবং স্বাধীন ইন্দোনেশিয়ার উদ্ভব হয়।
» ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের প্রক্রিয়া
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে সুমাত্রা ও জাভা ব্যতীত ইন্দোনেশিয়ার ওপর পুনরায় হল্যান্ড কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। শেষ পর্যন্ত ব্রিটেনের মধ্যস্থতায় স্থির হয় যে দ্বীপ দুটিতে ডঃ সুকর্ণ প্রতিষ্ঠিত জাতীয় সরকারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে।
» সুকর্ণর উদ্যোগে ইন্দোনেশিয়ার পুনর্গঠন
1949 খ্রিঃ স্বাধীন ইন্দোনেশিয়া প্রতিষ্ঠিত হলে এর প্রথম রাষ্ট্রপতি হন ডঃ সুকর্ণ এবং তিনি ওই পদে 1967 খ্রিঃ পর্যন্ত বহাল ছিলেন। 1945 খ্রিঃ পর থেকে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয়তাবাদী নেতাগণের উদ্যোগে দীর্ঘ চার বছর ধরে সংগ্রাম চালানাের পর শেষ পর্যন্ত জাতিপুঞ্জের মধ্যস্থতায় হল্যান্ড ইন্দোনেশিয়া থেকে চলে যেতে বাধ্য হয় এবং 1949 খ্রিঃ স্বাধীন ইন্দোনেশিয়ার উদ্ভব হয়। ডঃ সুকর্ণর নেতৃত্বে পরিচালিত স্বাধীনােত্তর ইন্দোনেশিয়ায় প্রথম পর্ব ছিল উদারনৈতিক গণতন্ত্রের যুগ বা গণতান্ত্রিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার যুগ। তবে 1957 খ্রিঃ থেকে শুরু হয় নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রের যুগ এবং এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক ছিলেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি সুকর্ণ ।
» সুকর্ণর পদক্ষেপ
রাষ্ট্রপতি হিসাবে ডঃ সুকর্ণ যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন সেগুলি ছিল এইরকম—
(A) শিক্ষার উন্নতি প্রচেষ্টা : শিক্ষার উন্নতিসাধন ব্যাবসাবাণিজ্য ও শিল্পের প্রসার সাধন এবং উন্নত প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে তিনি সচেষ্ট হন। এপ্রসঙ্গে উল্লেখযােগ্য 1950-196) খ্রিঃ মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার সাক্ষরতার হার তিন গুণ বৃদ্ধি পায়।
(B) রাজনৈতিক ব্যবস্থা : রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা রক্ষার জন্য তিনি কমিউনিস্ট দল, ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী দল, মুসলিম ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সামঞ্জস্যবিধান করেন।
(C) কৃষির সংস্কার : কৃষির উন্নতির স্বার্থে ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা লগ্নে ডঃ সুকর্ণ কৃষিক্ষেত্রে ডাচ-মার্কিন পরিচালিত নীতি দ্বারা কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন।
মূল্যায়ন
অবশেষে 1966 খ্রিঃ 12 মার্চ জেনারেল সুহার্তো রাষ্ট্রপতি সুকর্ণকে পদচ্যুত করে গৃহে অন্তরীণ করেন এবং ইন্দোনেশিয়ার ক্ষমতা দখল করেন।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .