ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনের গুরুত্ব
বাংলা তথা ভারতের ধর্ম ও সমাজ জীবনে ব্রাক্ষ্মসমাজের আন্দোলন গভীর প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়। এর ফলে হিন্দুধর্মের নবজাগরণ ও সংস্কার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। সামাজিক কু-রীতিসমূহ জনপ্রিয়তা হারাতে থাকে। শিক্ষা বিস্তারের ফলে মানুষের মনে যুক্তিবাদ স্থান পেতে থাকে। ব্রায়সমাজ কর্তৃক ভারতীয় সাংস্কৃতিক ঐক্যের তত্ত্ব প্রচারিত হবার ফলে জাতীয় ঐক্যবােধ জাগরিত হতে থাকে। ফলে জাতীয়তাবাদী চেতনা দেখা দেয়। ড. দেশাই বলেন “ব্রায়সমাজ ছিল জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের পথিকৃৎ।”
ব্রাম্মসমাজ আন্দোলনের সামাজিক গুরুত্ব অপরিসীম। ব্রা পত্রিকা “সুলভ সমাচার”-এর মধ্যে দিয়ে শিক্ষা ও শাসন ব্যবস্থার বর্তমান প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করা হয়। ব্রাহ্বসমাজ নারী স্বাধীনতা ও নারী শিক্ষার প্রসারে বহু কাজ করেছিল। ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে কেশবচন্দ্র সেনের প্রচেষ্টায় বয়স্কা নারীদের শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা। হয়। এছাড়া ব্রাহ্ বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ব্রায়সমাজ বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলেছিল। ব্রাম্মসমাজের প্রচেষ্টায় ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে তিন আইন দ্বারা বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহ রদ এবং বিধবা বিবাহ ও অসবর্ণ বিবাহ চালু হয়।
ব্রাম্মসমাজ ত্রাণের কাজেও সেবার কাজে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। ব্রাম্মসমাজ সমাজ সংস্কারের কার্যে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে। তাদের নীতিবােধ, যুক্তিবাদ ও নিজস্ব মতামত ব্যক্তিকে আত্মবিকাশের পথে নিয়ে যায়। এরা জাতিভেদ প্রথা, অস্পৃশ্যতার বিরােধিতাকে করে অনেকটাই সফলতা অর্জন করে। মদ্যপানের কুফল সম্পর্কেও জনগণকে সাবধান করে দেবার জন্য মদ না গরল’ নামক পত্রিকা। প্রকাশ করে প্রচার চালানাে হয়। শ্রমিকদের জন্য ব্রাম্মসমাজ নীতিবােধ প্রচার করে।
কোনাে কোনাে পণ্ডিত অবশ্য বলেন যে, ব্রাহ্সমাজ আন্দোলন ছিল এলিটপন্থী, শিক্ষিত বুদ্ধিজীবীদের একটি শহরকেন্দ্রিক আন্দোলন। সুদূর গ্রামাঞ্চলের সাধারণ কৃষিজীবী মানুষের মধ্যে এর প্রভাব ছিল না। এ প্রতিবেদন বহুলাংশে সত্য।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .