Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

সূর্যসেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনে বিবরণ দাও।

সূর্যসেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনে বিবরণ দাও।

অসহযােগ ও আইন অমান্য অন্দোলনের মধ্যবর্তীকালে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযােগ্য বিপ্লবী কার্যকলাপ ছিল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন। এর নায়ক ছিলেন সূর্যসেন, যিনি মাষ্টারদা নামেই খ্যাত। বিপ্লবের স্বার্থে অস্ত্র ক্রয় করার জন্য অস্ত্র সংগ্রহের প্রয়ােজনে কয়েকটি রাজনৈতিক ডাকাতি হয়েছিল চট্টগ্রাম বিপ্লবী গােষ্ঠীর নেতৃত্বে । বিপ্লবী কাজকর্মের জন্য মাষ্টারদাকে ২ বছর কারাদন্ড দেওয়া হয়। ১৯২৮ খ্রিঃ মুক্তিলাভ করে Indian Republic Army নামে একটি সংগঠন তৈরি করে সূর্যসেন ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণা করেন। তাঁর সহযােগী ছিলেন অনন্ত সিংহ, গণেশ ঘােষ, লােকনাথ বল, ত্রিগুণা সেন, অম্বিকা চক্রবর্তী, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত, জীবন ঘােষাল ও আরাে অনেক যুবক। ১৯৩০ সালের এপ্রিলে এই বিপ্লবী গােষ্ঠী চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের পরিকল্পনা করেন।

চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন

১৯৩০ খিষ্টাব্দের ১৮ই এপ্রিল রাত ১০টায় ৫০ জন বিপ্লবী যুবক ইংরেজ সৈন্যের পােষাক পরে চারটি দলে বিভক্ত হয়ে অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের জন্য অগ্রসর হয়। প্রতিটি দলকে নির্দিষ্ট কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রথম দলটি গণেশ ঘােষ ও অনন্ত সিংহের নেতৃত্বে পুলিশের অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করবে। দ্বিতীয় দলটি নির্মল সেন ও লােকনাথ বলের নেতৃত্বে রেলওয়ে অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করবে। তৃতীয় দলটি অম্বিকা চক্রবর্তীর নেতৃত্বে টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন এক্সচেঞ্জ আক্রমণ করে যােগাযােগ ব্যবস্থা বিছিন্ন করবে। চতুর্থ দলটি নরেশ রায় ও ত্রিগুণা সেনের নেতৃত্বে ইউরােপীয় নাইট ক্লাব আক্রমণ করবে। বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে বিপ্লবীরা চট্টগ্রাম কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে পড়েন। ইউরােপীয় ক্লাবে তখন কোনাে লােক না থাকায় সেই দলটিও ফিরে আসে গণেশ ঘােষ ও অনন্ত সিংহের দলের সঙ্গে যােগ দিয়ে অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করে। এই সময় একজন ইংরেজ মেজর ও কয়েকজন পুলিশ নিহত হয়। কিন্তু বিপ্লবীরা প্রচুর বন্দুক ও রাইফেল লুট করলেও অতি ব্যস্ততায় বারুদ লুট করতে ভুলে যায়। কারণ গােলাবারুদ ছিল অন্য ঘরে। অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করে বিপ্লবীরা মাষ্টারদার নেতৃত্বে বিপ্লবী সরকার গঠন করে।

জালালাবাদের মুক্তিযুদ্ধ

বিপ্লবীদের হঠাৎ আক্রমণে বিহুল ও বিপর্যস্ত পুলিশ বাহিনী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে নি। দুদিন চট্টগ্রাম বিপ্লবীদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ২০শে এপ্রিল পুলিশ বাহিনী বাইরে থেকে চট্টগ্রামে আসায় বিপ্লবীরা জালালাবাদ পাহাড়ে আশ্রয় নেয়। ২২শে এপ্রিল বিকাল ৫টার পর পুলিশ বিপ্লবীদের আক্রমণ করে। যুদ্ধে ৬৪ জন পুলিশ মারা যায় এবং অনেক বিপ্লবী নিহত হন। সূর্যসেন সহ কয়েকজন প্রথম শ্রেণির নেতাকে পালিয়ে যাওয়ার সুযােগ দেওয়ার জন্য টেগরা বল নামে এক কনিষ্ঠ বিপ্লবী প্রাণ বিসর্জন দিয়েও ইংরেজ বাহিনীকে যুদ্ধে রত রেখেছিল। মে পর্যন্ত ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের ২রা ফেব্রুয়ারী চট্টগ্রামের গয়রাল গ্রামে জনৈক গ্রামবাসীর বিশ্বাসঘাতকতায় মাষ্টারদা ধরা পড়েন। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ই জানুয়ারী সূর্য সেনের ফাঁসি হয়।

মূল্যায়ণ

ভারতের ইতিহাসে চট্টগ্রামের বিপ্লবী আন্দোলন এক অতি উল্লেখযােগ্য ঘটনা। ব্যর্থ হলেও সূর্যসেন ও তাঁর সৈনিকদের নির্ভীক সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ বাংলা ও ভারতের অন্য বিপ্লবীদের অনুপ্রাণিত করেছিল। ডঃ আর.সি.মজুমদার তাই বলেছেন, “ইংরেজের সহিত প্রত্যক্ষ সংগ্রামের পরিকল্পনা ও তাহার জন্য প্রস্তুতি বঙ্গদেশে ও ভারতের অনান্য স্থানে পরিলক্ষিত হলেও প্রকৃতপক্ষে ইহার প্রথম দৃষ্টান্ত জালালাবাদে চট্টগ্রামের যুদ্ধ এবং শেষে ও চরম দৃষ্টান্ত নেতাজী সুভাষচন্দ্রের আজাদ হিন্দ ফৌজের অভিযান।

Download PDF

Please wait..
If the download didn’t start automatically, click here.

Leave a reply