পুরাতন ও নব্যপ্রস্তর যুগের বৈশিষ্ট্য
সময়কাল
প্রাচীন প্রস্তর যুগের শুরু হয় অন্তত ৫০ হাজার বছর আগে এবং শেষ হয় প্রায় ১৫,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। পিকিং মানব, জাভা মানব সহ বিভিন্ন শাখার হােমাে ইরেক্টাস অর্থাৎ প্রায়-মানুষেরা প্রাচীন প্রস্তর যুগের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
হাতিয়ার
এ যুগের মানুষ বিভিন্ন ধরনের পাথর ও হাড়ের তৈরি হাতিয়ার ব্যবহার করত এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গােষ্ঠীবদ্ধ হয়ে বসবাস করত। এ যুগের মানুষ প্রকৃতি থেকে যে আকারের পাথর পেত কোনাে আকারগত পরিবর্তন না করেই সেটিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করত। তবে কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে পাথর ভেঙে ধারালাে ও তীক্ষ করার চেষ্টা করত বলেও মনে করা হয়। তারা একই হাতিয়ার দিয়ে মাংস কাটা, কাঠ কাটা, শিকার করা প্রভৃতি কাজ করত। প্রথমদিকের এই সাধারণ হাতিয়ার হাত-কুঠার’ নামে পরিচিত। ক্রমে তারা পাথরের বল্লম, ছুরি, চুঁচ, হারপুন, ব্ল্যাদা প্রভৃতি হাতিয়ার তৈরি করতে শুরু করে। এ যুগের হাতিয়ারগুলি হতাে অমসৃণ এবং বৃহদাকার। এ যুগের শেষদিকে মানুষ তির-ধনুক আবিষ্কার করে।
জীবিকা
পশু শিকার করে পশুর মাংস সংগ্রহ করাই ছিল প্রাচীন প্রস্তর যুগের মানুষের প্রধান জীবিকা। প্রথমদিকে ছােটো আকারের প্রাণী শিকার করলেও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তারা দলবদ্ধ হয়ে ম্যামথ, বাইসন, বলগা হরিণ প্রভৃতি বড়াে পশু শিকারে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল। এছাড়া এ যুগের মানুষ বনে-জঙ্গলে ঘুরে গাছের ফলমূল সংগ্রহ করত, পাখির ডিম সংগ্রহ করত, মাছ ধরত ইত্যাদি। আগুনের ব্যবহার জানত না বলে তারা কাঁচা মাংস খেত।
বাসস্থান
আদিম মানুষ প্রাচীন প্রস্তর যুগের প্রথমদিকে খােলা আকাশের নীচে বসবাস করত। পরবর্তীকালে তারা গুহার নীচে বসবাস শুরু করে। পরবর্তীকালে তারা গাছের ডালপালা, লতাপাতা, পশুর চামড়া প্রভৃতি দিয়ে তাদের আস্তানা তৈরি করত। এছাড়া গাছের ছাল বা পশুর চামড়া পরিধান করত।
মাতৃতান্ত্রিক সমাজ
এ যুগের সমাজ ছিল মাতৃতান্ত্রিক। পরিবার ও সমাজজীবনে পুরষের তুলনায় নারীদের প্রাধান্য বেশি ছিল।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .