Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

সম্পত্তির নিষ্ক্রমণ বলতে কী বোঝায়? সম্পত্তির নিষ্কমণের বিভিন্ন ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করো।

সম্পত্তির নিষ্ক্রমণ বলতে কী বোঝায়

অষ্টাদশ শতকের সূচনা থেকে বাংলার সম্পদ নিয়মিতভাবে ইউরোপে চলে যেতে শুরু করে। পলাশির যুদ্ধের (১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ) পর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি করায়ত্ত করলে সম্পদের বহির্গমন বৃদ্ধি পায়। বাংলা থেকে নিয়মিতভাবে সম্পদের নির্গমনের ঘটনাকে সমাজবিজ্ঞানী ও ঐতিহাসিকগণ সম্পত্তির নিষ্ক্রমণ বা Drain of Wealth-রূপে চিহ্নিত করেছেন। দাদাভাই নৌরজি তাঁর ‘Poverty and Un British Rule in India’ এবং রমেশচন্দ্র দত্ত তাঁর ‘Economic History of India’ নামক গ্রন্থে প্রথম এ বিষয়ে অলোকপাত করেন।

সম্পত্তির নিষ্কমণের বিভিন্ন ক্ষেত্র

১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে বাংলার সম্পদের নিষ্ক্রমণ দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হয় এবং সমগ্র ব্রিটিশ শাসনকাল ধরে বিভিন্ন মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে।

(১) কোম্পানির বাণিজ্য

১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশির যুদ্ধে জয়লাভের পর পুতুল নবাবকে সিংহাসনে স্থাপন করে কোম্পানি বাংলার ব্যাবসাবাণিজ্যের ওপর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। ফলে সম্পদের নিষ্ক্রমণ সূচিত হয়।

(২) ব্যক্তিগত বাণিজ্য

কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মচারীরা অধিক অর্থ উপার্জনের আকাঙ্ক্ষায় ব্যক্তিগত বাণিজ্যে লিপ্ত হয়। ফলে কোম্পানির বাণিজ্যের পাশাপাশি সম্পদ নিষ্ক্রমণের আর একটি ক্ষেত্র স্থাপিত হয়।

(৩) অবাধ বাণিজ্য

১৮১৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে কোম্পানির অবাধ বাণিজ্যনীতি বাংলার সম্পদকে ইউরোপীয় ইংরেজ বণিকদের কাছে উন্মুক্ত করে দেয়। কৃষিপণ্য বাণিজ্যিক চরিত্রলাভ করে ও ইংল্যান্ডের শিল্পবিপ্লব বাংলার কৃষিপণ্যকে ইংল্যান্ডের কারখানাগুলিতে পৌঁছে দেয়।

(8) বাণিজ্যিক নীতি

১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে দেওয়ানি লাভের পর কোম্পানির বাণিজ্যের নীতি দাঁড়ায় বাংলার সম্পদ দিয়ে বাংলার পণ্য ক্রয় কর ও ইংল্যান্ডে পাচার করা। এর ফলে বাংলা তথা ভারতে বিদেশি মুদ্রার আমদানি চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।

(৫) রাজস্ব নীতি

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অষ্টাদশ শতকের শেষভাগ থেকে ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন নীতি গ্রহণ করে। কিন্তু প্রতিটি ব্যবস্থারই লক্ষ্য ছিল কৃষিজ সম্পদকে শোষণ করা। বাংলায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে নগদ অর্থে রাজস্ব প্রদান ও কৃষিজ দ্রব্যের মূল্য হ্রাস পায়।

পি. জে. মার্শাল সম্পত্তির নিষ্ক্রমণের তত্ত্ব স্বীকার না করলেও অধিকাংশ জাতীয়তাবাদী ঐতিহাসিকের বিশ্বাস যে সম্পদের নিষ্ক্রমণের ফলে বাংলা তথা ভারত হতদরিদ্র হয়ে পড়ে।

Leave a reply