খিলাফৎ আন্দোলনকে সমর্থন করে গান্ধিজি ঠিক করেছিলেন না ভুল করেছিলেন, এই নিয়ে সকলে একমত নন। অনেকের মনে হয়েছিল খিলাফৎ আন্দোলনকে সমর্থন করে গান্ধিজি পরােক্ষভাবে সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্রয় দিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের মনে হয়েছিল, ‘Gandhiji was not working for the unity of India but for the pride and force of Islam.’
অসহযােগ আন্দোলন ছিল একটা রাজনৈতিক আন্দোলন, এর সঙ্গে খিলাফতের মত ধর্মীয় আন্দোলনকে যুক্ত করা অনেকের কাছে দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে হয়েছিল। অহিংসার উপর খিলাফতিদের তেমন আস্থা ছিল না। তারা সর্বদা অহিংসার আদর্শ মেনে চলবেন এমন প্রতিশ্রুতি দেন নি। শুধু মাত্র অসহযােগ আন্দোলনে মুসলমানদের সমর্থন আদায়ের জন্যই গান্ধিজি খিলাফৎ আন্দোলন সমর্থন করেন। হিন্দু মুসলমানের মধ্যে কোন স্থায়ী ঐক্য প্রতিষ্ঠার কোন পরিকল্পনা বা কর্মসূচী এই যৌথ আন্দোলনে ছিল না। ড. জুডিথ ব্রাউন বলেন যে, ‘গান্ধিজি যে কৌশল দ্বারা ব্যাপক মুসলিম সমর্থন লাভ করেন তা বুমেরাং হিসাবে কাজ
ফলাফল বা গুরুত্ব
ভারতীয় জাতীয় আন্দোলনে খিলাফৎ আন্দোলন এক গুরুত্বপূর্ণ স্থানের অধিকারী।
প্রথমত, এই আন্দোলনের মাধ্যমে হিন্দু মুসলিম জনসাধারণ ঐক্যবদ্ধভাবে ব্রিটিশ বিরােধী আন্দোলনে অবতীর্ণ হয়। ১৮৫৭ খ্রীঃ-র মহা বিদ্রোহের পর হিন্দু মুসলীম উভয় সম্প্রদায়ের এমন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন আর নজরে আসে নি।।
দ্বিতীয়ত, দীর্ঘকাল বাদে এই আন্দোলনের মাধ্যমে মুসলীম সম্প্রদায়ের এই আনুগত্যে ফাটল ধরে এবং তারা ব্রিটিশ বিরােধী আন্দোলনে অবতীর্ণ হয়। কে, কে, আজিজ বলেন যে- The Khilafat movement destroyed the myth of Muslim Loyalty’
তৃতীয়ত, বিধান চন্দ্র বলেন যে, খিলাফৎ আন্দোলন ভারতের অসহযােগ আন্দোলনকে বিশেষ ভাবে পরিপুষ্ট করেছিল। এই আন্দোলন শহরাঞলেব মুসলীমদের জাতীয় আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করে এবং এর ফলে জাতীয় আন্দোলনের ক্ষেত্রে প্রবল উৎসাহ-উদ্দীপনার সণ্ডার হয়।
চতুর্থত, এই আন্দোলনের মাধ্যমে গান্ধিজি হিন্দু-মুসলীম উভয় সম্প্রদায়ের আস্থা অর্জন করেন এবং তিনি সর্বভারতীয় নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। এই খিলাফৎ আন্দোলনই তাকে প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী করে তােলে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .