মহাবিদ্রোহের ক্ষেত্রে গুজবের একটি ভূমিকা
যে-কোনো বিদ্রোহের ক্ষেত্রে গুজব একটি বড়ো ভূমিকা গ্রহণ করে। মহাবিদ্রোহও তার ব্যতিক্রম নয়। এই সময় রটে যায় ১০০ বছর অতিক্রান্ত ব্রিটিশ শাসনের অবসান আসন্ন। সাধু ও ফকির শ্রেণির এই বক্তব্য সেনাদের উৎসাহিত করে। তাছাড়া আটার সঙ্গে হাড়ের গুঁড়োর মিশ্রণ, গুলিতে পশুর চর্বি ব্যবহার সিপাহিদের বিদ্রোহী করে তোলে। রুদ্রাংশু মুখার্জি তাঁর ‘Awadh in Revolt 1857-58’ গ্রন্থে দেখিয়েছেন গুজব, ভীতি ও আতঙ্ক সিপাহিদের ঐক্যবদ্ধ ও অভ্যুত্থানের পথে প্ররোচিত করেছিল। আর এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল সদ্য ঘটে যাওয়া সাঁওতাল বিদ্রোহের মতো সমসাময়িক ঘটনার অনুপ্রেরণা।
মহাবিদ্রোহের প্রসার
মুরশিদাবাদের বহরমপুরে বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল। পরে মঙ্গল পাণ্ডের নেতৃত্বে ব্যারাকপুরে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়েছিল। তারপর মিরাট, কানপুর, লখনউ, বেনারস, এলাহাবাদ, বেরিলি, জগদীশপুর, ঝাঁসি, আলিগড় প্রভৃতি অঞ্চলে বিদ্রোহের প্রসার ঘটে। বাংলায় সেভাবে বিদ্রোহ দেখা না দিলেও ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিদ্রোহ লক্ষ করা যায়। মোটামুটিভাবে উত্তরে পূর্ব পাঞ্জাব থেকে দক্ষিণে নর্মদার তীর, পূর্বে বিহার থেকে পশ্চিমে রাজপুতানা পর্যন্ত বিদ্রোহ বিস্তার লাভ করেছিল। হায়দরাবাদ বাদে দক্ষিণ ভারত এই বিদ্রোহে অংশ গ্রহণ করেনি।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .