তিতুমিরের বারাসাত বিদ্রোহের লক্ষ্য
বাংলাদেশে অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় কারণে যেসব কৃষক বিদ্রোহ হয়েছিল, সেগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল তিতুমিরের বারাসাত বিদ্রোহ (১৮৩১ খ্রিস্টাব্দ)। বাংলাদেশে ওয়াহাবি আন্দোলনকে সম্প্রসারণ করতে তিতুমির সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। মক্কায় অবস্থানকালে সৈয়দ আহম্মদের সঙ্গে বাংলাদেশের চব্বিশ পরগনার অন্তর্গত বাদুড়িয়া গ্রামের মীরনিশার আলি বা তিতুমিরের পরিচয় হয়।
তিতুমির সমগ্র দক্ষিণবঙ্গে ওয়াহাবিদের সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও আদর্শ প্রচারের কাজ আরম্ভ করেন। অল্পদিনের মধ্যেই এই অঞ্চলের মুসলমান প্রজা এবং নিম্নবর্ণের হিন্দুদের মধ্যে আন্দোলন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। স্থানীয় জমিদাররা ইংরেজ সরকারের সহযোগিতায় তিতুর ওপর আক্রমণ চালায়।
সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য তিতুর নির্দেশে নারকেলবেড়িয়া গ্রামে বাঁশের কেল্লা নির্মিত হল। ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দের ১৪ নভেম্বর ইংরেজ সৈন্যরা বাঁশের কেল্লা আক্রমণ করে এবং তিতুমির নিহত হয়। লর্ড বেন্টিঙ্কের নির্দেশে ব্রিটিশ গোলন্দাজ বাহিনী নারকেলবেড়িয়ায় তাঁর বিখ্যাত বাঁশের কেল্লা আক্রমণ করে। তিতুমির এবং সৈন্যরা তির-ধনুক ও বল্লম নিয়ে বিশাল ব্রিটিশ বাহিনীর সঙ্গে বীরের মতো লড়াই করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ গোলন্দাজ বাহিনীর গোলার আঘাতে তাঁর বাঁশের কেল্লা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। এই সংগ্রাম বারাসাত বিদ্রোহ নামে খ্যাত।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .