জোয়ারভাটা সৃষ্টির কারণ
ভূপৃষ্ঠে জোয়ারভাটা সৃষ্টির কারণ হল : (১) চন্দ্র-সূর্যের আকর্ষণ ও (২) পৃথিবীর আবর্তনের ফলে উৎপন্ন বিকর্ষণী শক্তি। সূর্যের তুলনায় চন্দ্র পৃথিবীর কাছে আছে বলে জোয়ারভাটা সৃষ্টির ক্ষেত্রে চন্দ্রের আকর্ষণই বেশি কার্যকরী হয়।
আবর্তনের ফলে পৃথিবী পৃষ্ঠের যে স্থান ঠিক চন্দ্রের সম্মুখে উপস্থিত হয় সেই স্থানে চন্দ্রের আকর্ষণের ফলে চন্দ্রের সম্মুখে অবস্থিত ভূ-পৃষ্ঠের জল সবচেয়ে বেশি ফুলে ওঠে এবং সেখানে জোয়ার সৃষ্টি হয়। এভাবে পৃথিবীর যে স্থানে চন্দ্রের আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি হয়, সেখানে তখন মুখ্য জোয়ার বা প্রত্যক্ষ জোয়ার সৃষ্টি হয়। চন্দ্রের আকর্ষণ স্থানের বিপরীত দিকে বা প্রতিপাদ স্থানে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব কম বলে, ঐ বিপরীত দিকে অবস্থিত জলরাশি প্রধানত প্রবল বিকর্ষণ শক্তির প্রভাবে স্ফীত হয়ে গৌণ বা পরোক্ষ জোয়ার সৃষ্টি করে। এভাবে পৃথিবীর কোনো একটি স্থানে মুখ্য জোয়ার এবং তার বিপরীত স্থানে গৌণ জোয়ার হয়।
ভাটা
মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ার অঞ্চলে জল সরবরাহ করতে গিয়ে এই দুই অঞ্চলের মধ্যবর্তী স্থানে জলতল নেমে যায়, ফলে ঐ দুই স্থানে ভাঁটার সৃষ্টি হয়।
নিচের জোয়ার ভাটা বিষয়টি ছবি থেকে ভালো করে বুঝে নেওয়া যায় :
(১) পৃথিবীর স্থলভাগের তুলনায় A2 অঞ্চলের জলভাগ চাঁদের দিকে বেশি আকর্ষণ অনুভব করে। ফলে A2 অংশের জল স্ফীত হয়ে মুখ্য জোয়ারের সৃষ্টি হয়।
(২) A₁ স্থানের জলভাগের তুলনায় পৃথিবীপৃষ্ঠ চন্দ্রের দিকে বেশি টান অনুভব করে। ফলে A₁ অঞ্চলের জল স্ফীত হয়ে গৌণ জোয়ারের সৃষ্টি হয়।
(৩) চন্দ্রের আকর্ষণের প্রভাবে B₁ ও B₂ অঞ্চল থেকে A₁ ও A₂ অঞ্চলে প্রবাহিত হওয়ার জন্য B₁ ও B₂ অঞ্চলের জলতল নেমে গিয়ে ভাটার সৃষ্টি করে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .