Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

পৃথিবীকে ক’টি তাপমণ্ডলে বিভক্ত করা যায়? বিভাগগুলির বৈশিষ্ট্য লেখো।

সূর্যতাপের পরিমাণের পার্থক্য অনুসারে পৃথিবীকে মোটামুটি পাঁচটি তাপমণ্ডলে ভাগ করা যায়। এদের বিষয়ে নীচে আলোচনা করা হল :

[১] গ্রীষ্মমণ্ডল

নিরক্ষরেখার উত্তর ও দক্ষিণ উভয় দিকে ২৩° অক্ষাংশ পর্যন্ত কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি রেখাদ্বয়ের মধ্যবর্তী ৫,২০০ কিলোমিটার বিস্তৃত অঞ্চলকে গ্রীষ্মমণ্ডল বা উষ্ণমণ্ডল বলে।

বৈশিষ্ট্য

  1. দিনের দৈর্ঘ্যের বিশেষ পার্থক্য হয় না এবং প্রত্যেক স্থানে সূর্যরশ্মি বছরে অন্তত দুদিন মধ্যাহ্নে লম্বভাবে পতিত হয়;
  2. এই সমস্ত কারণে সারা বছর ধরে এই অঞ্চল, পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে উষ্ণ থাকে;
  3. এখানে শীত ও গ্রীষ্মের উষ্ণতার পার্থক্যও কম হয়;
  4. এই অঞ্চলের যে কোনো স্থানে বার্ষিক গড় উষ্ণতা ২৭° সেলসিয়াস বা তার বেশি;
  5. যদিও সূর্যের আপাত-গতি সাধারণভাবে কর্কটক্রান্তি রেখা (২৩\tfrac{১}{২}^{\circ} উত্তর অক্ষরেখা) ও মকরক্রান্তি রেখার (২৩\tfrac{১}{২}^{\circ} দক্ষিণ অক্ষরেখা) মধ্যেই সীমাবদ্ধ, কিন্তু তার প্রভাব আরও কিছু উত্তর ও দক্ষিণে পৌঁছায়, তাই গ্রীষ্মমণ্ডলের প্রকৃত সীমানা নিরক্ষরেখা থেকে ৩০° উত্তর ও ৩০° দক্ষিণ পর্যন্ত ধরা যায়;
  6. নিরক্ষরেখার উভয় পাশে ২৭° সেলসিয়াস সমোষ্ণরেখা পর্যন্ত স্থানই প্রকৃত গ্রীষ্মমণ্ডল।

[২] উত্তর নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডল ও [৩] দক্ষিণ নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডল

গ্রীষ্ম-মণ্ডলের উত্তরে ও দক্ষিণে ৬৬\tfrac{১}{২}^{\circ} পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলের অন্তর্গত।

বৈশিষ্ট্য :

  1. এই অঞ্চলে, সূর্যরশ্মি খুব একটা লম্বভাবে বা তির্যকভাবে পড়ে না। সেইজন্য এই অঞ্চল : গ্রীষ্মে খুব একটা উষ্ণ বা শীতে খুব একটা শীতল হয় না;
  2. উত্তর ও দক্ষিণ-গোলার্ধের এই দুই অঞ্চলকে যথাক্রমে উত্তর নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডল ও দক্ষিণ নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডল বলে;
  3. এদের প্রত্যেকের বিস্তৃতি প্রায় ৪,৮০০ কিমি;
  4. এই  ণ্ডলের যে অংশ হিমমণ্ডলের নিকটবর্তী (প্রায় ৪৫°—৬৬°), তাকে শীতপ্রধান নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডল এবং যে অংশ গ্রীষ্মমণ্ডলের নিকটবর্তী (প্রায় ৩০° – ৪৫°), তাকে গ্রীষ্ম প্রধান নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডল বলে;
  5. সমোষ্ণরেখা অনুসারে প্রত্যেক গোলার্ধে ২৭° সেলসিয়াস থেকে ০° সেলসিয়াসের মধ্যবর্তী স্থানই হল প্রকৃত নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডল।

[৪] উত্তর হিমমণ্ডল ও [৫] দক্ষিণ হিমমণ্ডল

দুই মেরুর চতুর্দিকে ২৩° অক্ষাংশ ব্যাপী স্থানকে হিমমণ্ডল বলে।

বৈশিষ্ট্য

  1. উত্তর ও দক্ষিণ এই দুই মেরুর চারদিকে ২৩° অক্ষাংশ পর্যন্ত সমস্ত স্থানে সূর্যের অবনতি বছরের সব সময় ৪৩°-র বেশি থাকে এবং সূর্যরশ্মি সবচেয়ে তির্যকভাবে পড়ে
  2. ই অঞ্চলের সর্বত্রই বছরে অন্তত একদিন আকাশে সূর্যকে দেখাই যায় না;
  3. উত্তর ও দক্ষিণ মেরুবিন্দুতে একসঙ্গে ছয় মাস দিন ও ছয় মাস রাত্রি হয়;
  4. এই সমস্ত কারণে এখানে উষ্ণতা নেই বললেই চলে এবং এই স্থান দুটি অত্যন্ত শীতল। সুমেরুর চতুর্দিকে উত্তর হিমমণ্ডল ও কুমেরুর চতুর্দিকে দক্ষিণ হিমমণ্ডল অবস্থিত;
  5. যেহেতু এই অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ২৪ ঘণ্টা থেকে ৬ মাস পর্যন্ত সূর্য একেবারেই অস্ত যায় না তাই এই দুই অঞ্চলকে “নিশীথ সূর্যের দেশ-ও বলে;
  6. মেরু অঞ্চলে ছয় মাস ব্যাপী অন্ধকারের সময় আকাশে মাঝে মাঝে রামধ মত অস্পষ্ট আলো দেখা যায়। এ আলোকে সুমেরু অঞ্চলে সুমেরু প্রভা ও কুমেরু অঞ্চলে কুমেরু প্রভা বলে;
  7. উত্তর হিমমণ্ডলের সীমারেখা ৬৬\tfrac{১}{২}^{\circ} উত্তর সমাক্ষরেখা অর্থাৎ সুমেরু বৃত্ত এবং দক্ষিণ হিমমণ্ডলের সীমারেখা ৬৬\tfrac{১}{২}^{\circ} দক্ষিণ সমাক্ষরেখা বা কুমেরু বৃত্তকে ধরা হয়;
  8. সমোষ্ণরেখা অনুসারে ০° সেলসিয়াস সমোষ্ণরেখা থেকে উত্তর এবং দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত স্থানকেই প্রকৃত হিমমণ্ডল ধরা হয়।

Leave a reply