হোমরুল আন্দোলন ও তার ফলাফল
জাতীয় আন্দোলনের ইতিহাসে যখন ভাটা পড়েছিল, হোমরুল আন্দোলন তখন জোয়ার এনে দিয়েছিল। শাসনব্যবস্থার অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে ভারতীয়দের আধিপত্য অর্জনের দাবিগুলি সামনে রেখে শুরু হয়েছিল হোমরুল আন্দোলন, যা গান্ধি-পূর্ব রাজনীতিকে আলোকিত করেছিল।
উদ্দেশ্য
জনগণের দ্বারা নির্বাচিত এক দায়িত্বশীল সরকার গঠন করাই ছিল এই অন্দোলনের উদ্দেশ্য। দেশের অভ্যন্তরে যখন আর্থিক সংকট বেড়েই চলেছিল তখন তিলক ও বেসান্ত হোমরুল আন্দোলনের ডাক দেন।
তিলকের ভূমিকা
মান্দালয় জেল থেকে মুক্তিলাভের পর তিলক হোমরুল আন্দোলন শুরু করেন। তিনি বলেন – “Swaraj is my birthright and I must have it.” শুধু স্বায়ত্ত শাসন অর্জনেই তিলক হোমরুল আন্দোলনকে সীমাবদ্ধ রাখেননি, ভাষাভিত্তিক প্রদেশ গঠন, মাতৃভাষায় শিক্ষাদান এবং জাতিগত প্রভেদকে দূর করার প্রয়াসে তিলক ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে হোমরুল আন্দোলনকে পরিচালিত করেছিলেন। তিলক তখন ‘লোকমান্য রূপে সমাদৃত হন।
অ্যানি বেসান্তের ভূমিকা
একজন আইরিশ সমাজসেবীর ভারতীয়দের দুঃখ-দুদর্শায় কাতর হয়ে ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়া ভারতীয় রাজনীতির এক বড়ো পাওনা। তিনি জাতীয় কংগ্রেসের মধ্যে সংঘবদ্ধতার কথা বলেন। তিনি ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে হোমরুল লিগের প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর হোমরুল আন্দোলন বেনারস, কানপুর, বিহার, কালিকট, মুথরা, গুজরাট এলাহাবাদ প্রভৃতি স্থানে ছড়িয়ে পড়েছিল।
উপসংহার
পরিশেষে বলা যায় যে, জাতীয় আন্দোলনের মরাগাঙে জোয়ার এনেছিল। হোমরুল আন্দোলন। এই আন্দোলন ভারতীয়দের চেতনাকে সমৃদ্ধ করে। তাই ড. আর সি. মজুমদার বলেছেন— “The Home Rule Movement marked the beginning of a new phase in India’s struggle for freedom.
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .