বনোচ্ছেদনের ফলে পরিবেশের ক্ষতি
নানা কারণে মানুষ বনের গাছপালা কেটে চলছে। চাষের জমির চাহিদা বৃদ্ধি, নগরায়ণ, শিল্প কারখানা স্থাপন, রাস্তাঘাট তৈরির কারণে বিস্তীর্ণ বনভূমি অপসারিত হচ্ছে, এভাবে পৃথিবীতে প্রতি সেকেন্ডে মানুষ দেড় একর বন ধ্বংস করে। এর ফলে পরিবেশে যেসব ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যায়, সেগুলি হল—
মরুভূমি সৃষ্টি
বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে বনোচ্ছেদনের ফলে মাটি আলগা হয়ে বালি পাথর বেরিয়ে গিয়ে আর মাটিতে জলের পরিমাণ কমে গিয়ে মরুভূমি সৃষ্টি (Desertification) হতে পারে।
ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমে নেমে যাওয়া
বন কেটে ফেললে পাশাপাশি অঞ্চলের মাটি আর বৃষ্টির জল ধরে রাখতে পারে না, ফলে মাটির নীচের জলস্তর বা ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমে নীচে নেমে যায়।
খরা ও বন্যার সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়া ও জলচক্র ব্যাহত হওয়া
অতিরিক্ত বনোচ্ছেদের ফলে আবহাওয়ার ভৌত উপাদানগুলির বিরূপ প্রভাবের দরুন বৃষ্টিপাতের ধরনের পরিবর্তন ঘটে খরা ও বন্যার সম্ভাবনা বাড়ে। বাতাসে জলীয় বাষ্প কমে গিয়ে মেঘ সৃষ্টিতে বাধা দেয়, ফলে জলচক্র (জলীয় বাষ্প → মেঘের সঞ্চার → বৃষ্টিপাত) ব্যাহত হয়। বৃষ্টিপাত কমে গিয়ে জলবায়ুরও পরিবর্তন হয়।
বিশ্ব উয়ায়ন
অতিরিক্ত বনোচ্ছেদনের ফলে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে আর কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বাড়ে। CO2 শোষণকারী গাছের সংখ্যা কমে গিয়ে পৃথিবীপৃষ্ঠ গরম হয়ে বিশ্ব উন্নায়ন(Global Warming) ঘটে।
প্রজাতির বিলুপ্তি
বনে অসংখ্য প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী বাস করে। বন কেটে ধ্বংস করার ফলে মূল্যবান উদ্ভিদ প্রজাতিগুলির সঙ্গে গাছে আশ্রয় নেওয়া প্রাণীগুলি খাদ্য ও বাসস্থানের অভাবে বিলুপ্ত হয়। এভাবে জীববৈচিত্র্যও হ্রাস পায়।
পরিবেশদূষণ
গাছপালা কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন, নাইট্রোজেনের অক্সাইড প্রভৃতি গ্যাস শোষণ করে
বায়ুদূষণ রোধ করে। জলদূষণ ও মাটিদূষণ রোধেও বনভূমির গাছপালার ভূমিকা আছে, সেজন্য বন ধ্বংস হলে পরিবেশদূষণ বাড়ে।
Read More
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .