মিশরকে নীলনদের দান বলা হয়, কারণ
নীচের কারণগুলোর জন্য মিশরকে নীলনদের দান বলা হয় :
[১] নীলনদের জলে উর্বর ও শস্যশ্যামলা মিশর :
প্রায় সমস্ত মিশর নীলনদের পলি দিয়ে গঠিত এবং নীলনদের জলে উর্বর ও সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা হয়েছে।
[২] সাহারা মরুভূমির কবল থেকে মিশরকে রক্ষায় নীলনদের অবদান:
নীলনদ না থাকলে ঊষর মরুভূমিতে অবস্থিত মিশর মানুষের বাস করার অনুপযুক্ত হত। বিশেষ করে খাটুম শহর থেকে মোহনা পর্যন্ত বিস্তৃত স্থানকে সাহারা মরুভূমি ধীরে ধীরে গ্রাস করে ফেলত। নীলনদের উপস্থিতির জন্য তা সম্ভব হয়নি।
[৩] বৃষ্টিহীন মিশরের সেচ ও কৃষিতে নীলনদের অবদান :
মিশরে তেমন বৃষ্টিপাত শীতকালে হয় না। বর্তমানে নীলনদের ওপর আসোয়ান, অ্যাসিয়ুট প্রভৃতি বাঁধ দিয়ে জলাধার তৈরি করে তার সাহায্যে সারাবছর ধরে মিশরে জলসেচের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়েছে। ফলে শ্রেষ্ঠ মানের দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলা, গম, যব, ধান, আখ প্রভৃতি মূল্যবান কৃষি দ্রব্যের চাষ করা সম্ভব হয়েছে। সেইজন্য বলা হয়, মিশর একটি মরুপ্রায় কিন্তু কৃষিপ্রধান দেশ।
[৪] রেল ও সড়ক পরিবহনে নীলনদের অবদান :
নীলনদের দুই তীরের সমতলভূমির ওপর রেল লাইন ও প্রশস্ত সড়ক পথ নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে।
[৫] মিশরের নৌ-পরিবহনে নীলনদের অবদান:
নীলনদ দিয়ে সারাবছর জাহাজ ও নৌকা চলাচল করতে পারে, তাই এই অঞ্চলের জল পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত।
[৬] পশুপালনে নীলনদের অবদান :
নীল অববাহিকার তৃণভূমিতে গোরু, ভেড়া, ছাগল প্রভৃতি পশুপালন করা হয় এবং বহু লোকের জীবিকানির্বাহ সম্ভব হয়।
[৭] মিশরের জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে নীলনদের অবদান :
নীলনদের ওপর নির্মিত বৃহদায়তন বাঁধগুলোতে বিপুল পরিমাণে জলবিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়।
[৮] মিশরের শিল্পোন্নতিতে নীলনদের অবদান :
উন্নত কৃষি, সুলভ শ্রমিক ও জলবিদ্যুৎ এবং জলপথে খনিজদ্রব্য, কাঁচামাল ও পরিবহনের সুবিধা থাকায় নীলনদের অববাহিকায় নানান শিল্প গড়ে উঠেছে। এদের মধ্যে বস্তুবয়ন ও কৃষিজাত শিল্প উল্লেখযোগ্য।
■ বৃষ্টি বিরল উষর সাহারা মরুভূমির মধ্যে বিভিন্ন দিকে মিশরের এই সমৃদ্ধি নীলনদের জন্যই সম্ভব হয়েছে এই জন্যই মিশরকে নীলনদের দান বলা হয়।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .