রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্ব
প্রাচীন অর্থনীতিবিদ ডেভিড রিকার্ডোর ভাষায় – “জমির আদি ও অবিনশ্বর ক্ষমতা ব্যবহার করার জন্য জমির মালিককে যা দেওয়া হয় তা-ই হলো খাজনা।”
রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্ব অনুযায়ী নিম্নলিখিত অনুমানগুলি ধরে নেওয়া হয়েছে –
- জমির আদি ও অবিনশ্বর ক্ষমতার প্রতিদান হলো খাজনা।
- অর্থনীতির বিচারে জমির জোগান সম্পূর্ণরূপে অস্থিতিস্থাপক।
- জমির বিকল্প ব্যবহার নেই। জমি কোনো শস্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হবে নইলে জমি পতিত অবস্থায় পড়ে থাকবে।
- জমিতে উৎপাদিত শস্যের বাজারে পূর্ণ প্রতিযোগিতা রয়েছে।
- জমির বাজারেও পূর্ণ প্রতিযোগিতা রয়েছে। অর্থাৎ বহু সংখ্যক জমির মালিক ও অনেক প্রজা রয়েছে।
- জমি হলো প্রকৃতির দান। এর কোনো উৎপাদন দাম নেই। সুতরাং খাজনা হলো উবৃত্ত।
- উৎপাদনের কাজে জমি ব্যবহৃত হলে জমিতেও ক্রমহ্রাসমান প্রতিদানের নিয়ম কার্যকরী হয়। ফলে জমির প্রান্তিক উৎপাদন ক্ষমতা ক্রমাগত কমে।
রিকার্ডোর মতে, জমি সমউর্বরতা সম্পন্ন বলে দুষ্প্রাপ্যতাজনিত খাজনা এবং জমির উর্বরতার পার্থক্য হেতু পার্থক্যমূলক খাজনার উদ্ভব হয়। রিকার্ডোর খাজনা তত্ত্ব অনুযায়ী তিনটি অবস্থায় খাজনার উদ্ভব হয় বা খাজনা বৃদ্ধি পেতে পারে। প্রথমতঃ জমির উৎপাদনশীলতা অপরিবর্তনীয় থাকা সত্ত্বেও কৃষকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে খাজনার উদ্ভব বা খাজনা বাড়তে পারে। দ্বিতীয়তঃ কৃষকের সংখ্যা বাড়েনি কিন্তু উৎপন্ন শস্যের দাম বেড়েছে বলে খাজনা বাড়বে এবং তৃতীয়ত : শুধুমাত্র জমির উৎপাদনশীলতা বাড়লেও খাজনা বাড়বে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .