এইডস (HIV/AIDS)
এইডস ভাইরাসের আক্রমণের পর বিভিন্ন রােগসৃষ্টির অবস্থাকেই এডস (AIDS) বলে। এইডস ভাইরাসের নাম হল হিউম্যান ইমিউনােডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (Human Immunodeficiency Virus) সংক্ষেপে (HIV)। এইডস-এর পুরাে নাম অ্যাকোয়্যার্ড ইমিউন ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম (Acquired Immune Deficiency Syndrome)। এইডস-এর ফলে দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। HIV দেহের শ্বেত রক্তকণিকাগুলিকে ধ্বংস করে অথচ দেহকে সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে শ্বেত রক্তকণিকাগুলি একান্ত প্রয়ােজন। এই কণিকাগুলি বিনষ্ট হওয়ার পর দেহ যে-কোনাে রােগের এমনকি, ক্যানসারের সহজ শিকার হয়ে পড়ে।
এইডস (HIV/AIDS) ভাইরাস কীভাবে অন্য দেহে সংক্রমিত হয়
এইডস (HIV/AIDS ) আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত, শুক্র এবং যােনি নিঃসরণের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে এডসের ভাইরাস থাকে। এই ভাইরাস অন্যের দেহে সঞ্চারিত হওয়ার উপায় হল :
- কোনােরকম সাবধানতা অবলম্বন না করে এডুস রােগীর সঙ্গে অবাধ যৌন সংসর্গ করা;
- দূষিত রক্ত বা রক্তজাত পদার্থ শরীরে গ্রহণ করা;
- সংক্রমিত ব্যক্তির দেহে ব্যবহৃত সুচ বা যন্ত্রপাতির শােধন না করে ব্যবহার করা;
- গর্ভস্থ সন্তানের দেহে সংক্রমণ হওয়া।
কী অবস্থায় এইডস (HIV/AIDS) ভাইরাস সংক্রমিত হয় না
- দৈনন্দিন জীবনে স্বাভাবিক মেলামেশা বা যােগাযােগের সময় এইডস (HIV/AIDS) ভাইরাস সংক্রমণের কোনাে আশঙ্কা থাকে না। এ ছাড়া–
- একই বাড়িতে বসবাস করা;
- দৈহিক স্পর্শ বা করমর্দন করা;
- একই শৌচাগার ব্যবহার করা;
- এইডস রােগীর সর্দি, হাঁচি-কাশির সংস্পর্শে আসা;
- একত্রে কাজ ও ভ্রমণ করা;
- একত্রে পান ও ভােজন করা;
- একত্রে খেলা, একই বিদ্যালয়কক্ষে পড়াশুনা ইত্যাদির মাধ্যমে এডস ভাইরাস কখনই অন্য ব্যক্তির শরীরে সংক্রমিত হয় না।
এইডস (HIV/AIDS) সংক্রমণ কীভাবে চেনা যায়
বাইরে থেকে কোনাে পুরুষ বা স্ত্রীলােককে দেখে তিনি এইডস-আক্রান্ত কিনা বােঝার উপায় নেই। রােগ ধরা পড়ে কেবল অ্যান্টিবডি পরীক্ষার পর। যদি ‘এলিসা’ (ELISA) পরীক্ষায় কারুর দেহে সংক্রমণ ধরা পড়ে এবং তা দ্বিতীয়বারের পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায়, তা হলেই বুঝতে হবে যে, ব্যক্তিটির অবশ্যই এইডস সংক্রমণ হয়েছে।
এইডস রোগের লক্ষণ
- এইডস (HIV/AIDS) ভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার বহু পরে (৬-৮ বছর) লক্ষণগুলি ফুটে ওঠে। লক্ষণগুলি দীর্ঘস্থায়ী। এইডস রোগের লক্ষণগুলি হল :
- একটানা বহুদিন ঘুসঘুসে জ্বর, ঘুমের সময় অতিরিক্ত ঘাম।
- ঘন ঘন পেট খারাপ বা উদরাময়।
- ক্রমাগত ক্লান্তি এবং দেহের ওজন দ্রুত শতকরা ১০ থেকে ২০ ‘ভাগ কমে যাওয়া।
- অনবরত কাশি এবং হাঁপানির মতো অস্বস্তি।
- মুখের ভেতরে এবং জিভে সাদা সাদা ছােপ বা ছত্রাক ইত্যাদি। এই লক্ষণগুলি দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া একান্ত জরুরি।
এইডস রোগের নিরাময়
বর্তমানে এইডসের কোনাে চিকিৎসা নেই। AZT, DDI/A, DDC জাতীয় ওষুধ এডস-এর প্রকোপ অনেকখানি কমিয়ে দেয় এবং রােগের জটিলতা বৃদ্ধিকে ঠেকিয়ে রাখে। এই সব ওষুধের মাধ্যমে অন্যান্য অনেক রােগজীবাণুর আক্রমণ (opportunistic infections) থেকে রােগীকে সাময়িকভাবে রক্ষা করা যায়।
Conclusion
আপনি যদি এই নিবন্ধটি পছন্দ করেন, তাহলে অনুগ্রহ করে Social Networking সাইটে শেয়ার করুন। এছাড়াও আপনি আমাদের টুইটার, ফেসবুক এবং ইউটিউবে খুঁজে পেতে পারেন।
তবুও, আপনার মনে কোন সন্দেহ আছে শুধু নীচে কমেন্ট করুন, আমরা অবশ্যই আপনাকে সাহায্য করব। আপনি যদি মনে করেন যে “আমাদের ব্লগে কোন উন্নতি প্রয়োজন” তাহলে আমাদের পরামর্শ দিন।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .