ভারতে ‘আর্য’ শব্দটি জাতিগত অর্থে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু স্যার উইলিয়াম জোন্স, ম্যাক্সমুলার প্রমূখ ইউরােপীয় ভাষাতত্ত্ববিদগণের মতে আর্য’ হল ইন্দো-ইউরােপীয় ভাষাগােষ্ঠী। এই ভাষাগােষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হল গ্রিক, ল্যাটিন, ইরানি, জার্মান ও সংস্কৃত ভাষা। এই ভাষাগুলির কোনাে একটিতে কথােপকথনকারীকে আর্য বলা যেতে পারে। আর্য শব্দটি ‘বহিরাগত’, ‘সুসভ্য’, সদ্বংশজাত প্রভৃতি বিভিন্ন অর্থে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ভারতের আর্যরা ছিল জাতিগতভাবে নর্ডিক গােষ্ঠীভুক্ত এবং এরা ছিল দীর্ঘকায়, গৌরবর্ণ ও উন্নতনাসা।
আর্যদের আদিবাসভূমি কোথায়—এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক মহল দ্বিধাবিভক্ত। পণ্ডিত গঙ্গনাথ ঝা, ডঃ ত্রিবেদী, পার্টিজার, এ. সি. দাস, লক্ষীধর শাস্ত্রী প্রমুখ পণ্ডিতগণ ধারণা করেন যে ভারতই ছিল আর্যদের আদি বাসভূমি।
কারণ আর্যরা আদিবাসভূমি পরিত্যাগ করে ভারতে এসেছে, এমন কোনাে উল্লেখ বৈদিক সাহিত্যগুলিতে নেই। তাছাড়া ঋগবেদের জলবায়], গাছপালা ও বর্ণনার সঙ্গে পাঞ্জাব ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলের ‘সপ্তসিন্ধু উপত্যকার মিল পাওয়া যায়।
অপরদিকে অধিকাংশ আধুনিক ঐতিহাসিক ভাষাতত্ত্বের বিশ্লেষণ করে আর্যদের ইউরােপ থেকে আগত ভাষা গােষ্ঠী রূপে চিহ্নিত করেছেন। তাদের মতে অধিকাংশ আর্যভাষাই ইউরােপে লক্ষ করা যায়। তাছাড়া প্রাকৃতিক বর্ণনার সঙ্গে রাশিয়ার কিঘিজ স্তেপ অঞ্চলের মিল লক্ষ করা যায়। এখান থেকে আর্যদের একটি গােষ্ঠী খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ থেকে ১৫০০- এর মধ্যে হিন্দুকুশ পর্বত অতিক্রম করে আফগানিস্তানের মধ্য দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .