1947 খ্রিঃ 14 আগস্ট ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। এই রাষ্ট্রটি খাতায়কলমে ইসলামীয় প্রজাতান্ত্রিক পাকিস্তান নামে অভিহিত। প্রথম থেকেই পাকিস্তান সংসদীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতান্ত্রিক কাঠামাে হিসাবে গড়ে ওঠে। ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের মতােই পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্র একাধারে প্রশাসনিক ও সংসদীয় এই দুই ভাগে বিভক্ত।
পাকিস্তানের প্রশাসনিক বিভাগ
(i) রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা
পাকিস্তান পার্লামেন্টের সিনেট, জাতীয় সভা এবং প্রাদেশিক বিধানসভাগুলির নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে নির্বাচকমণ্ডলী পাকিস্তান রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতিকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত করে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে দেশ পরিচালনা করেন। তবে কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের কিছু কিছু নিজস্ব ক্ষমতা প্রয়ােগ করার অবকাশ রয়েছে।
(ii) প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জাতীয়সভায় নির্বাচিত সদস্যদের দ্বারা মনােনীত হন। মন্ত্রীসভায় পূর্ণমন্ত্রী, রাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও মন্ত্রী পরিষদের উপদেষ্টাদেরও অস্তিত্ব দেখা যায়। ভারতের মতােই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে দেশ পরিচালনা করেন। মন্ত্রীসভার অন্যান্য সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা করেন।
পাকিস্তানের সংসদীয় বিভাগ
ভারতীয় সংসদীয় ব্যবস্থার মতােই পাকিস্তান পার্লামেন্টও উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ এই দুইভাগে বিভক্ত। পাকিস্তান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষকে বলা হয় সিনেট এবং নিম্নকক্ষকে বলা হয় জাতীয় সভা।।
(i) সিনেট
পাকিস্তান সিনেট এমন একটি স্থায়ী আইনসভা যেখানে বর্তমান পাকিস্তানের চারটি প্রদেশ থেকে সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হয়। সংবিধানের ক্ষমতাবলে শুধুমাত্র অর্থ সংক্রান্ত আইনের বিল পেশ করা ছাড়া সিনেট ও জাতীয় সভা নামক দু’টি কক্ষের যেকোনাে কক্ষ অন্য যে কোনাে ধরনের আইন প্রণয়নের জন্য বিল পেশ করতে সক্ষম। এইসব কারণে সিনেটকে পাকিস্তানের সংসদীয় কাঠামােয় স্থায়ী আইনসভা রূপে চিন্তিত করা হয়।
(ii) জাতীয় সভা
পাকিস্তানের জাতীয় সভার নির্বাচন পদ্ধতি বহুলাংশে আমাদের পার্লামেন্টের লােকসভার নির্বাচন পদ্ধতির সঙ্গে তুল্যমূল্য। পাকিস্তানে সর্বজনীন ভােটাধিকারের মাধ্যমে জাতীয় সভার সদস্যদের নির্বাচিত হতে হতাে। এই সভার সদস্যরা মৃত্যুজনিত কারণে অথবা স্বয়ং পদত্যাগ না করা বা জাতীয় সভা ভেঙে না দেওয়া পর্যন্ত পাঁচ বছরের মেয়াদ সদস্যপদে থেকে যান।
বহুদলীয় রাজনীতি ও নির্বাচন ব্যবস্থা
পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্র এক বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার আধার। বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তান প্রায় তার জন্মলগ্ন থেকে বারবার একনায়কতন্ত্র সুলভ সামরিক শাসনের শিকার হয়েছে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .