অসহাযােগ আন্দোলন
১৯২০ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে গান্ধিজি এক ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগঠিত করার জন্য ‘অহিংস অসহযােগ’নীতি ঘােষণা করেন এবং কেন্দ্রীয় খিলাফত কমিটি’ এই সিদ্ধান্ত অনুমােদন করেন। অতঃপর ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের আগস্টমাসে কলকাতার অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে অসহযােগ আন্দোলনের সূচনা হয়।
অসহযােগ আন্দোলনের লক্ষ্য
অসহযােগ আন্দোলনের তিনটি মূল লক্ষ্যের ব্যাপারে কংগ্রেস ও খিলাফত কমিটি একমত হয়, যথা- (১) পাঞ্জাবের অন্যায়ের প্রতিকার; (২) খিলাফতের প্রতি ব্রিটিশ তথা মিত্রপক্ষের অন্যায়ের প্রতিকার এবং (৩) এক বছরের মধ্যে ভারতের স্বরাজ অর্জন।
অসহযােগ আন্দোলনের কর্মসূচি
এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল দুই প্রকার – গঠনমূলক ও ধ্বংসমূলক।
১। গঠনমূলক কর্মসূচি
আন্দোলন পরিচালনার জন্য এক কোটি টাকার একটি তহবিল, প্রায় এক কোটি স্বেচ্ছাসেবকের একটি বাহিনী গঠন, বিদেশি বস্ত্র বর্জন ও বেকারদের কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে ২০ লক্ষ চরকা, বিতরণ প্রভৃতি ছিল গঠনমূলক উদ্দেশ্যের অন্তর্গত।
২। ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি
অন্যদিকে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচিগুলির মধ্যে বিশেষ উল্লেখযােগ্য হল – ব্রিটিশ সরকারের আদালত বর্জন ও বিচারের জন্য ট্রাইবুনাল গঠন, সকল প্রকার উপাধি, সম্মান ও অনুষ্ঠান বর্জন, বিদ্যালয় ও কলেজ বর্জন ও জাতীয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক কাউন্সিল নির্বাচন বর্জন, মাদক বর্জন ও নিষিদ্ধকরণ, সরকারি যে কোনাে প্রকার সংস্কার প্রচেষ্টার সঙ্গে অসহযােগিতা।
উপসংহার
এই দেখা যায় যে, গান্ধিজি সম্পূর্ণ অহিংস পদ্ধতিতে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে সর্বক্ষেত্রে অসহযােগিতা করে ব্রিটিশ শাসনকে অচল করার জন্যই অসহযােগ আন্দোলনের সূচনা করেন।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .