আলিপুর বােমা মামলা
ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকী কর্তৃক মুজফফরপুরের ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যার চেষ্টায় ভুলক্রমে মিসেস ও মিস্ কেনেডি নিহত হওয়ার পর ক্ষুদিরাম বসু ওয়ানি স্টেশনে ধরা পড়েন। প্রফুল্ল চাকী আত্মহত্যা করেন। ক্ষুদিরাম বসুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ মানিকতলার বিপ্লবী ঘাঁটির কথা জানতে পারে এবং পুলিশি অভিযানের মাধ্যমে মুরারিপুকুর রােডের বাড়ি থেকে অরবিন্দ ঘােষ সহ ৩৬ জন বিপ্লবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এভাবে শুরু হয় আলিপুর বােমার মামলা। আলিপুর ষড়যন্ত্র মামলার বিচারপতি ছিলেন ইংল্যান্ডে অরবিন্দের ছাত্রজীবনের সহপাঠী বীচ্ ক্রফট। প্রায় একবছর ধরে এই মামলা চলে।
মামলা চলাকালে পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর নন্দলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, সরকারী উকিল আশুতােষ বিশ্বাস ও ডি.এস.পি সামসুল আলম বিপ্লবীদের হাতে নিহত হন। শুধু তাই নয়, জেলের ভিতরেও রাজসাক্ষী হতে চাওয়া বিপ্লবী নরেন গােসাইকে কানাইলাল দত্ত ও সতেন্দ্রনাথ বসু নামে অন্য দুই বন্দী জেলের মধ্যেই নরেনকে গুলি করে হত্যা করে কানাইলাল ও সত্যেন বসুর ফাসি হয়।
আলিপুর বােমার মামলায় ব্যারিস্টার চিত্তরঞ্জন দাশের প্রচেষ্টায় অরবিন্দ ঘােষ নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে মুক্তি পান। আর অধিকাংশ বিপ্লবীরই দীর্ঘমেয়াদী কারাদন্ড বা দীপান্তর হয় (১৯০৯ খ্রিঃ)। অনুশীলন সমিতি ও যুগান্তর দল নিষিদ্ধ ঘােষিত হয়। আলিপুর বােমার মামলার পর সাময়িকভাবে বাংলার বিপ্লববাদ থমকে যায়।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .