ওয়াহাবী আন্দোলন এর ব্যর্থতার কারণ
উনবিংশ শতাব্দীতে মুসলিম সংস্কারবাদী আন্দোলন হিসাবে ওয়াহাবী আন্দোলন ভারতীয় জনজীবনে গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। শাহ ওয়াল্লিউল্লাহ এই আন্দোলনের সূচনা করলেও ভারতে ওয়াহাবী আন্দোলনের প্রধান সংগঠক ছিলেন উত্তরপ্রদেশের রায়বেরিলির সৈয়দ আহমেদ। আহমেদ পরিচালিত ওয়াহাবী আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হয়ে ওঠে সমাজের নিম্নবর্গের মানুষদের আর্থিক সংকট থেকে মুক্ত করা এবং ব্রিটিশ অপশাসনের উচ্ছেদ ঘটানাে। কিন্তু এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হয়ে ওঠে সমাজের নিম্নবর্গের মানুষদের আর্থিক সংকট থেকে মুক্ত করা এবং ব্রিটিশ অপশাসনের উচ্ছেদ ঘটানাে। কিন্তু এই আন্দোলনের কিছু সীমাবদ্ধতার জন্য এই আন্দোলন ব্যর্থ হয়।
প্রথমতঃ
আন্দোলনের লক্ষ্য ও কর্মসূচী স্থির ছিল না। ধর্মকে ভিত্তি করে শুরু হয়ে ক্রমে কৃষকদের শ্রেণি আন্দোলনের রূপ নেয়। আংশিক ধর্মীয়, আংশিক অর্থনৈতিক এই আন্দোলনে ভিত মজবুত হতে পারেনি।
দ্বিতীয়তঃ
অস্ত্রশস্ত্র এবং সশস্ত্র আন্দোলনের মানসিকতার অভাবে এই বিদ্রোহকে ব্যর্থতায়
পর্যবেসিত করেছিল।
তৃতীয়তঃ
আন্দোলনের মূল কেন্দ্র ছিল উত্তর পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চল। স্থানীয় উপজাতি গােষ্ঠীগুলির সাহায্য ও সমর্থনের উপর আন্দোলনের সাফল্য নির্ভর করত। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই উপজাতিদের সাথে ওহাবী নেতৃত্বের বিরােধ দেখা দেয়।
চতুর্থতঃ
আন্দোলনকারীরা অর্থ, অস্ত্র ও রসদের জন্য দেশের অভ্যন্তরে ওহাবী কেন্দ্রগুলির উপর নির্ভর করত। কিন্তু এতদূর থেকে প্রয়ােজনমতাে সরবরাহের সম্ভাবনা কম ছিল। উপরন্তু ইংরেজ যে কোন মুহূর্তে এই সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারত।
পঞ্চমতঃ
আন্দোলনের নেতৃবর্গ ভারতের গরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায়কে এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করার কোন উদ্যোগ নেয় নি।
ষষ্ঠতঃ
ওহাবীদের প্রতিপক্ষ জমিদার, মহাজন ও ইংরেজ সবদিক থেকেই আন্দোলনকারীদের তুলনায় শক্তিশালী ছিল। একটা সংগঠিত বাহিনীর বিরুদ্ধে এই অসংগঠিত আন্দোলনের ব্যর্থতা ছিল খুবই স্বাভাবিক।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .