বিশ শতকের ছয়ের দশকের পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নয়া-আচরণবাদ বা আচরণবাদোত্তর চিন্তাধারার উদ্ভব ঘটে। নয়া আচরণবাদের প্রধান প্রবক্তা ডেভিড ইস্টন একে আচরণবাদোত্তর বিপ্লবরূপে আখ্যায়িত করেন। আচরণবাদোত্তর আন্দোলন রাষ্ট্রচিন্তার জগতে এক নতুন মাত্রা যোগ করে। নয়া-আচরণবাদ কঠোর পদ্ধতিনির্ভর ও বিজ্ঞানসম্মত রাজনৈতিক বিশ্লেষণকে অতিক্রম করে তাকে মানবিক ও নৈতিক চেতনায় সমৃদ্ধ করে তোলে।
সাবেকি চিন্তাধারা থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে সম্পূর্ণ মুক্ত করার যে প্রয়াস আচরণবাদে শুরু হয় নয়া-আচরণবাদী বিপ্লব তাকে প্রত্যাখ্যান করে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে পুরোপুরি মুল্যবোধহীন করে গড়ে তোলার বিরুদ্ধে নয়া-আচরণবাদে রায় দেওয়া হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিশ্লেষণে গঠনমূলক ও মানবিক মূল্যবোধ সঞ্চার করার লক্ষ্যে নয়া-আচরণবাদীরা জোরালো অভিমত প্রকাশ করেন। একথা বলা হয় যে, “Post-behaviouralism seeks to reintroduce a concern for values in behavioural approach itself “। ডেভিড ইস্টন আচরণবাদের পদ্ধতিসর্বস্বতা, রক্ষণশীলতা এবং বিশুদ্ধ বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা করে নয়া-আচরণবাদের সূচনা করেন। ইস্টনের মতে রাজনীতিতে মুল্যবোধের প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ—একে উপেক্ষা করা যায় না। এভাবে নয়া-আচরণবাদে সাবেকি মুল্যমানযুক্ত আলোচনার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে রাজনৈতিক তত্ত্ব ও প্রয়োগের মধ্যে একটা সমন্বয় সাধন করা হয়।
নয়া আচরণবাদের মৌলিক বৈশিষ্ট্য
নয়া আচরণবাদের মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
১) মানবিক ও নৈতিক চেতনা
উত্তর-আচরণবাদ কঠোর পদ্ধতিনির্ভর ও বিজ্ঞানসম্মত রাজনৈতিক বিশ্লেষণকে অতিক্রম করে রাজনৈতিক ব্যবস্থার আলোচনাকে মানবিক ও নৈতিক চেতনায় সমৃদ্ধ করে তোলে।
২) সাবেকি আলোচনার গুরুত্ব
সাবেকি চিন্তা থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে সম্পূর্ণ মুক্ত করার যে প্রয়াস আচরণবাদে শুরু হয় নয়া-আচরণবাদী বিপ্লব তাকে প্রত্যাখ্যান করে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে পুরোপুরি মূল্যবোধহীন করে গড়ে তোলার বিরুদ্ধে উত্তর-আচরণবাদে রায় দেওয়া হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিশ্লেষণে গঠনমূলক ও মানবিক মূল্যবোধ সঞ্চার করার লক্ষ্যে নয়া -আচরণবাদীরা জোরালো অভিমত প্রকাশ করেন।
৩) মৌলিক বিষয়বস্তুর ওপর গুরুত্ব আরোপ
নয়া -আচরণবাদ কৌশলের (Technique) বদলে মৌলিক বিষয়বস্তুকে বেশি গুরুত্ব দেয়। সমকালীন গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য এখানে গবেষণা ও আলোচনার ওপর প্রাধান্য দেওয়া হয়।
৪) সামাজিক বিকাশে জ্ঞানের ভূমিকা
নয়া-আচরণবাদ সামাজিক বিকাশের স্বার্থে জ্ঞানের কাজে লাগানোয় বিশ্বাসী। এর প্রবক্তাদের মতে, সমাজকে উন্নত করার ক্ষেত্রে জ্ঞানকে কাজে লাগানো না গেলে তা অর্থহীন।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .