একসময় ভারতীয় বস্ত্রশিল্প ইউরোপ তথা বিশ্বের বাজার দখল করে থাকলেও অষ্টাদশ শতকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকালে দ্রুত অবক্ষয়ের সম্মুখীন হয়। এর পিছনে নানা কারণ দেখা যায়।
প্রথমত
বক্সারের যুদ্ধের পর ব্রিটিশ বাণিজ্যনীতি পরিবর্তিত হয়। কোম্পানি ভারতীয় অর্থে ভারতীয় পণ্যসামগ্রী কিনে ইংল্যান্ডে রপ্তানি করে। ফলে কোম্পানি অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সরিয়ে মুনাফভোগী আধিপত্য স্থাপন করলে তাঁতিশ্রেণি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
দ্বিতীয়ত
কোম্পানি দাদন প্রথা প্রচলন করায় তাঁতিরা কোম্পানিকে মাল সরবরাহে বাধ্য হয় এবং দস্তুরি প্রথার ফলে দরিদ্র শ্রেণি তাঁত ছেড়ে অন্য জীবিকায় নিয়োজিত হয়।
তৃতীয়ত
ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লবের ফলে কম দামে ইংল্যান্ডের উন্নতমানের বস্ত্রসামগ্রী ভারতীয় বাজার দখল করলে ভারতের তাঁত শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
চতুর্থত
শিল্পজাত দ্রব্য ভারতে বিক্রি ও ইউরোপের বাজারে ভারতীয় সুতিবস্ত্রের জোগান বন্ধের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ শিল্পপতিদের চাপে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অসম শুল্ক নীতি গ্রহণ করে। ব্রিটিশ শিল্পজাত পণ্য ভারতে আমদানির ক্ষেত্রে 2\tfrac{1}{2}% শুল্ক ধার্য করা হলেও ভারত থেকে ইউরোপে রপ্তানিকৃত সুতিবস্ত্রের ওপর 67\tfrac{1}{2}% ও মসলিনের ওপর ৩৭২% চাপানো হয়। এই অসম শুল্কনীতির ফলে ভারতীয় বস্ত্রশিল্প ধ্বংস হয়।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .