এই বিদ্রোহ বঙ্গদেশে প্রথম দেখা দিলেও বিদ্রোহের মূল স্রোত থেকে বঙ্গদেশ ছিল বিচ্ছিন্ন। বহরমপুর, ব্যারাকপুর, ঢাকা, চট্টগ্রামে বিদ্রোহের চেষ্টা বাঙালিকে তেমন অণুপ্রাণিত করেনি।
হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, কালীপ্রসন্ন সিংহ, দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের মতো মুষ্টিমেয় কয়েকজন বুদ্ধিজীবীর চিত্ত মহাবিদ্রোহে চঞ্চল হয়ে উঠলেও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, অক্ষয়কুমার দত্ত, রাজনারায়ণ বসুর মতো বাঙালি ব্যক্তিত্ব বিদ্রোহের বিরোধিতা করেছিলেন। ঈশ্বর গুপ্তের মতো কবিও মহাবিদ্রোহের নায়ক-নায়িকাদের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেছিলেন। এ ব্যাপারে গ্রাম্য ও শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানসিকতায় কোনো পার্থক্য ছিল না।
বিপিনচন্দ্র পালের মতে, সিপাহি বিদ্রোহের ফলে প্রাকৃব্রিটিশ যুগে ফিরে যাবার আকাঙ্ক্ষায় বাঙালি বুদ্ধিজীবী এতে যোগদান করেননি। ইংরেজ শাসনের ফলে যে উদারপন্থী মানসিকতার স্বাদ তাঁরা পেয়েছিলেন এবং বেথাম, মিল, টমাস পেইন প্রমুখের সাহচর্য তাঁরা হারাতে চাননি কোনো মূল্যে। তাই প্রমোদ সেনগুপ্ত যথার্থই বলেছেন “নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থে তথা শ্রেণি- স্বার্থে বাঙালি বুদ্ধিজীবী ইংরেজ সরকারকে সমর্থন করেছিল।”
এই বিদ্রোহের সমর্থক কয়েকজন বাঙালি হলেন করিম খাঁ, বৃন্দাবন তেওয়ারি, মির জঙ প্রমুখ।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .