সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ
সূচনা
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের তাণ্ডব ও ধ্বংসলীলা এবং মারণযজ্ঞের খেলায় যখন বিশ্বের দেশগুলি মেতে উঠেছিল, তখন বিশ্বের শান্তিকামী দেশগুলি বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা স্থাপনের শুভ প্রয়াস চালায়। সেই শুভ প্রয়াসের গর্ভেই জন্ম নেয় সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ।
উদ্দেশ্য
জাতিপুঞ্জের সনদ গঠন : আমেরিকার সানফ্রান্সিসকো শহরে জাতিপুঞ্জের সনদ রচিত হয়। এতে ১১১টি ধারা স্থান পায়। এই সনদে ঘোষণা করা হয় যে, এই সংস্থার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হল আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা অক্ষুণ্ণ রাখা। সমস্ত রাষ্ট্রের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মানবতাবাদী সহযোগিতা গড়ে তোলা ইত্যাদি।
সনদের প্রস্তাবনা
সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদে যে প্রস্তাবনা রচিত হয় তার্তে এই সংগঠনের উদ্দেশ্য প্রকাশ পায়। এর প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে যে, আমরা সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সদস্যরা প্রতিজ্ঞা করছি যে, যুদ্ধ আমাদের জীবদ্দশায় পরপর দু-বার মানবজাতির অশেষ দুঃখ-দুর্দশা সৃষ্টি করেছে, সেই যুদ্ধের যন্ত্রণা থেকে পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য এতদ্বারা জাতিপুঞ্জ নামে একটা আন্তর্জাতিক সংঘ গঠন করা হল।
ব্যর্থতার কারণ
জাতিপুঞ্জ তার সীমিত সামর্থ্যকে সঙ্গী করে ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়িয়েছিল এবং সাফল্যও পেয়েছিল। কিন্তু বৃহৎ শক্তিগুলির যুদ্ধের উন্মাদনাকে জাতিপুঞ্জ প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছিল। যেমন ২০০৩ সালে জাতিপুঞ্জকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে আমেরিকা যে ইরাক আক্রমণ করে তা জাতিপুঞ্জের অস্তিত্বের সংকটকে জনসমক্ষে তুলে ধরে। জাতিপুঞ্জ বৃহৎশক্তিবর্গ তথা আমেরিকার নয়া সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে অক্ষম এবং বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনে ব্যর্থ।
উপসংহার
অনেক স্বপ্ন ও আশা নিয়ে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের জন্ম হয়। তারপর থেকে সাফল্য ও ব্যর্থতার অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত তার ব্যর্থতাকে ঢেকে রাখতে পারেনি। আমেরিকার আগ্রাসী নীতি থেকে বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা কত দিন টিকিয়ে রাখা যাবে তা কে জানে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .