বিভিন্ন বৃষ্টিপাত সৃষ্টির কারণ
(১) সব মেঘ থেকেই বৃষ্টি হয় না। বৃষ্টিপাতের জন্য প্রয়োজন হয় : (ক) জলীয়বাষ্পপূর্ণ সম্পৃক্ত বায়ু, (খ) বায়ুর ওপরে ওঠার প্রবণতা এবং (গ) সেই বায়ুকে শীতল করার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান।
(২) জলীয়বাষ্প বিশুদ্ধ বায়ুর তুলনায় হালকা হওয়ায় প্রচুর জলীয়বাষ্পপূর্ণ সম্পৃক্ত বায়ুও হালকা হয়ে ওপরের দিকে উঠে যায় এবং ওপরের বায়ুমণ্ডলের প্রবল শৈত্যের সংস্পর্শে এসে দ্রুত শিশিরাঙ্কে পৌঁছায়।
(৩) এছাড়া, বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরে বায়ু চাপ কম হওয়ায় সেই বায়ু সহজে প্রসারিত হয়ে আরও শীতল হয়ে পড়ে।
(৪) যেহেতু বাতাসের জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতা উষ্ণতার ওপর নির্ভর করে, সেই জন্য উষ্ণতার তুলনায় জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি হলে বায়ু আর জলীয়বাষ্প ধরে রাখতে পারে না।
(৫) তখন জলীয়বাষ্পগুলো বায়ু থেকে আলাদা হয়ে বায়ুমণ্ডলে ভাসমান এক-একটি ধূলিকণাকে আশ্রয় করে মেঘরূপে ঊর্ধ্বাকাশে ভাসতে থাকে।
(৬) ওই মেঘ বাতাসের প্রভাবে আরও ওপরে উঠে আরও শীতল হলে অতিরিক্ত জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ছোটো ছোটো জলকণায় পরিণত হয়।
(৭) বায়ুতে ভাসমান ওই সব ছোটো ছোটো জলকণা পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়ে আরও বড়ো জলকণায় পরিণত হয়।
(৮) বড়ো জলকণাগুলো আশপাশের ছোটো জলকণাগুলোকে গ্রাস করে নিয়ে ক্রমশ এত বড় হয় যে তা আর আকাশে ভেসে বেড়াতে পারে না। পৃথিবীর মাধ্যকর্ষণ শক্তির প্রভাবে তখন তারা বৃষ্টিপাত হিসেবে নীচে নেমে আসে, এইভাবে ‘গ্রাস প্রক্রিয়ায়’ বৃষ্টিপাত হয়।
(৯) এছাড়া জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু আরও অনেক ওপরে উঠলে ওপরের শৈত্যের সংস্পর্শে এসে বরফকণায় পরিণত হয়।
(১০) এইসব বরফকণা পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়ে আরও বড়ো বরফ কণায় পরিণত হলে এক সময় তারা আর বাতাসে ভেসে থাকতে পারে না এবং পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে শিলাবৃষ্টি, বায়ুতে ভাসমান তুষার উল্কা, তরল তুষার, প্রভৃতি রূপ ধরে নীচে নেমে আসে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .