ভারতের স্বাধীনতা আইন
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ভারতের মাটি তখন রক্তস্নাত । সেই সংকটজনক মুহূর্তে। মাউন্টব্যাটেন বড়োলাট হয়ে আসেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২৫ মার্চ এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি পৃথক রাষ্ট্রের কথা ঘোষণা করেন। সেই প্রসঙ্গে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথাও ঘোষিত হয়।
স্বাধীনতা আইনের খসড়া
ব্রিটিশ সংসদ ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৮ জুলাই ভারতের স্বাধীনতা আইন অনুমোদন করে। এই আইনে বলা হয় –
(ক) ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি পৃথক রাষ্ট্র গঠিত হবে।
(খ) পাকিস্তান গঠিত হবে বেলুচিস্তান, উত্তর- পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, সিন্ধু, পশ্চিম পাঞ্জাব ও পূর্ব বাংলাকে নিয়ে।
(গ) অবশিষ্ট অংশ নিয়ে গঠিত হবে ভারত। দেশীয় রাজ্যগুলিকে যে-কোনো একটি ডোমিনিয়নে যুক্ত হওয়ার কথা বলা হল।
(ঘ) ভারত, পাকিস্তান দুটি দেশ ব্রিটিশ কমনওয়েলথ-এর মধ্যে থেকে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার পাবে।
স্বাধীনতা লাভ
ভারতবাসীর আকাঙ্ক্ষিত সেই দিনটি এগিয়ে এল। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ আগস্টের মধ্যরাত্রে গণপরিষদের অধিবেশন বসল। ভারত ১৫ আগস্ট পূর্ণ স্বাধীনতা পেল। ভারতের স্বাধীনতার সন্ধিক্ষণে জহরলাল নেহরু তাঁর আবেগমথিত কণ্ঠে গণপরিষদে বললেন, “মধ্যরাত্রির ঘণ্টা যখন বাজবে, সমগ্র বিশ্ব যখন গভীর নিদ্রামগ্ন, ভারত তখন জেগে উঠবে জীবন ও স্বাধীনতার চেতনায়।”
উপসংহার
বহু রক্তঝরা দিনের পরিণতি ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট। ভারতবাসী দুশো বছরের পরশাসনের শৃঙ্খল ছিঁড়ে বেরিয়ে এসে পেল মুক্তির স্বাদ। অগণিত মানুষ মেতে উঠল স্বাধীনতার সূর্যোদয়ে। যদিও প্রশ্ন থেকেই যায় এ কোন্ স্বাধীনতা?
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .