সূচনা
অসহযোগ আন্দোলন যখন থেমে যায় তখন দেশের আন্দোলনকামী জনতার মনে এক শূন্যতার সৃষ্টি হয়। গান্ধিজিসহ কংগ্রেসের অনেকেই তখন জেলে, এরূপ পরিস্থিতিতে বিকল্প পথ হিসেবে চিত্তরঞ্জন দাশ ও মতিলাল নেহরুর নেতৃত্বে স্বরাজ্য দলের জন্ম হয়।
আন্দোলনের কর্মসূচি
স্বায়ত্তশাসন লাভ ছিল স্বরাজ্য দলের মুখ্য ভূমিকা। আর এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে স্বরাজ্য দল তার কর্মসূচি নির্ধারণ করে। যেমন আইনসভায় যোগ দিয়ে সমস্ত রকম সরকারি কাজের বিরোধিতা করা, সরকারি বাজেটের বিরোধিতা করে সঠিক অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করে বিদেশি শোষণকে বন্ধ করা।
সরকারের ভূমিকা
নির্বাচনে স্বরাজ্য দলের সংযুক্তির আশঙ্কায় সরকার ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের ২৫ অক্টোবর এক অর্ডিন্যান্স জারি করে নেতাদের গ্রেপ্তার করে। স্বরাজ্য দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকার আন্দোলনকারীদের ওপর অত্যাচার চালায়। ফলে স্বরাজ্য দলের এই আন্দোলন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
স্বরাজ্য দলের ব্যর্থতার কারণ
চিত্তরঞ্জন দাশের অকালমৃত্যু এই আন্দোলনকে স্তিমিত করে দেয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল ব্রিটিশ সরকারের অনমনীয় নীতি। নীতি-নৈতিকতার প্রশ্নে দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে ওঠে। আইনসভায় অনেক সদস্যই সরকারের নীতির সঙ্গে আপস করতে থাকে। সর্বোপরি, মুসলিম সম্প্রদায়কে এই আন্দোলনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে ব্যর্থ হয়। এই সব কারণে স্বরাজ্য দল লুপ্ত হয়ে যায়।
উপসংহার
ব্যর্থতার মধ্যেও সবকিছুরই একটা সাফল্য থাকে। ক্রমাগত আন্দোলনে ব্রিটিশ সরকার জর্জরিত হয়ে ভারত শাসন আইন পুনর্মূল্যায়ন করতে সাইমন কমিশন গঠন করে এবং এর ফলে পরবর্তী আইন অমান্য আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .