বাংলায় জাতীয়তাবাদী কার্যকলাপ ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে আতঙ্কের কারণ ছিল। তাই বাংলার জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দুর্বল করে দেওয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকার হিন্দু মুসলিমের মধ্যে বিভেদনীতির বীজ বপন করে বাংলা বিভাগের মতো জঘন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গের উদ্দেশ্য
কার্জনের পূর্ববর্তী শাসক প্রশাসনিক সুবিধার জন্য বৃহত্তর বাংলাকে বিভক্ত করার পরিকল্পনা করেছিলেন। যদিও লর্ড কার্জনের বাংলা বিভাগের পিছনে উদ্দেশ্য ছিল দুটি –
- প্রশাসনিক উদ্দেশ্য এবং
- রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।
প্রশাসনিক উদ্দেশ্য
প্রথমত, লর্ড কার্জন বাংলাকে ভাগ করার পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছিলেন, যে বাংলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে প্রশাসনব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
দ্বিতীয়ত, রাজধানী শহর হিসেবে কলকাতার দূরত্ব এত বেশি যে, এখান থেকে উত্তর-পূর্ব বাংলার ওপর নজর রাখা সম্ভব নয়, তৃতীয়ত, এত বড়ো দেশে একজন শাসকের পক্ষে শাসনকার্য পরিচালনা করা অসম্ভব।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্য
কিন্তু প্রশাসনিক সুবিধার থেকে কার্জনের রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিই ছিল বেশি। উনিশ শতকে দুই বাংলা একত্রিত ছিল। রাজনৈতিক দিক থেকে কলকাতা ছিল চিন্তাশীল এবং বিপ্লবী রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র। তাই সমগ্র বাংলায় যাতে এর প্রভাব না পড়ে তার জন্য বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
হিন্দু-মুসলিম অনৈক্য সৃষ্টি
লর্ড কার্জন বাংলাদেশকে বিভক্ত করে হিন্দু-মুসলিমের মিলিত শক্তিকে দুর্বল করতে চেয়েছিলেন। এই উদ্দেশ্য তিনি বাংলায় সাম্প্রদায়িক রাজনীতির জন্ম দিতে চেয়েছিলেন।
উপসংহার
বঙ্গবিভাগের পরিকল্পনায় লর্ড কার্জনের ভূমিকা ছিল ধূর্ত শিয়ালের মতো, এর পিছনে তাঁর কোনো সদিচ্ছা ছিল না। তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বীজ রোপণ করা।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .