সূচনা
ঔপনিবেশিক প্রাধান্য বিস্তারই ইংরেজদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল। সেইজন্য ভারতে ব্রিটিশ শাসনকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে যতটুকু ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত কেরানি তৈরি করার প্রয়োজন ছিল, সেই উদ্দেশ্যকে চরিতার্থ করার জন্য কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটায়।
সরকারি উদ্যোগ
১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা মেকানিক ইনস্টিটিউট নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে রুরকি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপিত হয়। ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে পুনার ওভারশিয়ার স্কুলকে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে উন্নীত করা হয়। একই বছরে মাদ্রাজের বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের রূপ দেওয়া হয়। কারিগরি শিক্ষার ব্যাপারে কার্জনের সময়কালে উদ্যোগ লক্ষ করা গিয়েছিল।
স্বদেশি আন্দোলনের ভূমিকা
ভারতে স্বদেশি আন্দোলনের যুগে কারিগরি শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপিত হয়। জাতীয় শিক্ষা পরিষদ স্বদেশি শিক্ষাপ্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। পরিষদের উদ্যোগে বহু সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়। এদের মধ্যে যাদবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ অন্যতম। সামগ্রিকভাবে ব্রিটিশ আমলে কারিগরি শিক্ষার অগ্রগতি ছিল মন্থর।
ব্রিটিশ ভারতে কারিগরি শিক্ষার ফলাফল
ভারতবাসীকে কারিগরি বিদ্যার দ্বারা স্বনির্ভর ও প্রগতিবাদী করার ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকারের কোনো সদিচ্ছা ছিল না। বড়ো বড়ো শহরগুলিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার ফলে গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ’ এই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল। অন্যদিকে মুসলিম সম্প্রদায় কারিগরি শিক্ষা গ্রহণে ততটা আগ্রহী ছিল না। আসলে কারিগরি শিক্ষা ছিল ভারসাম্যহীন।
উপসংহার
কারিগরি শিক্ষার প্রসার জনমানসে চেতনার প্রসার ঘটিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু সরকারের উদাসীনতা কারিগরি শিক্ষার গতিপথকে সংকুচিত করেছিল। পরবর্তীকালে শিক্ষা সংস্কার আন্দোলন সেই সংকোচনকে অনেকটা শিথিল করেছিল বলা যায়।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .