Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান হিসেবে উষ্ণতার গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করো।

আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান হিসেবে উষ্ণতার গুরুত্ব

আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান হিসেবে উষ্ণতার অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। কেননা উষ্ণতার ওপরেই আবহাওয়া ও জলবায়ুর অন্যান্য উপাদান, যেমন: বায়ুচাপ, বায়ুপ্রবাহ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত প্রভৃতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভর করে। উষ্ণতার পার্থক্যে আবহাওয়া ও জলবায়ুর এইসব উপাদানগুলোর যথেষ্ট তারতম্য লক্ষ করা যায়, যেমন :

(১) বায়ুর উষ্ণতা বায়ুর চাপ

উষ্ণতা কমে গেলে বায়ু সঙ্কুচিত হয় এবং বায়ুর চাপ বেড়ে যায়। আবার উষ্ণতা বেড়ে গেলে বায়ু আয়তনে প্রসারিত হয় এবং বায়ুচাপ কমে যায়। কাজেই, উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুচাপ বিপরীত অনুপাতে পরিবর্তিত হয়, অর্থাৎ উষ্ণতা কমলে বায়ু চাপ বাড়ে এবং উষ্ণতা বাড়লে বায়ুচাপ কমে।

(২) বায়ুর উষ্ণতা ও বায়ুপ্রবাহ

বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুচাপেরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ভূ-পৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে বায়ুচাপের তারতম্যের ফলেই বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়। যেখানে বায়ু চাপ বেশি সেখান থেকে যেখানে বায়ুর চাপ কম, বায়ু সে দিকেই যায়। এইভাবে উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে বায়ু ধাবিত হলে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়। বায়ুচাপ উষ্ণতার ওপর নির্ভর করে, অতএব বায়ুপ্রবাহ উষ্ণতার ওপর নির্ভরশীল।

(৩) বায়ুর উষ্ণতা ও আর্দ্রতা

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বেড়ে গেলে জলীয় বাষ্প ধারণের ক্ষমতা বাড়ে, আবার, উষ্ণতা কমে গেলে জলীয়বাষ্প ধারণের ক্ষমতা কমে যায়। অতএব বায়ুর জলীয় বাষ্প ধারণের ক্ষমতা বা বায়ুর আর্দ্রতা, বায়ুর উষ্ণতার ওপর নির্ভরশীল ।

(৪) বায়ুর উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাত

উচ্চচাপ অঞ্চল (শীতল অঞ্চল) থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের (ঊষ্ণ অঞ্চল) দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় বায়ুপ্রবাহের গতি পথে সাগর বা মহাসাগর থাকলে বায়ু প্রচুর জলীয় বাষ্প গ্রহণ করে। বায়ু যতই উষ্ণ অঞ্চলের দিকে যেতে শুরু করে ততই তার লীয় বাহু ধারণের ক্ষমতা বেড়ে যেতে থাকে। জলীয়বাষ্প বিশুদ্ধ বায়ুর তুলনায় হালকা হওয়ায় জলীয়বাষ্পপূর্ণ পরিপৃক্ত বায়ুও হালকা হয়ে ওপরে উঠে যেতে থাকে এবং ওপরের শীতল বায়ুস্তরের প্রভাবে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। কাজেই বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বৃষ্টিপাত গভীর সম্পর্কযুক্ত।

(৫) প্রাণী ও উদ্ভিদ জীবনে উষ্ণতার প্রভাব

উষ্ণতার পার্থক্যের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন রকম জীব জন্মায়। যেমন : মেরু অঞ্চলে অত্যধিক ঠাণ্ডায়, সীলমাছ, পেঙ্গুইন পাখি প্রভৃতি প্রাণী বাস করতে পারে, কিন্তু উষ্ণ অঞ্চল এদের জীবনধারণের উপযোগী নয়। আবার উষ্ণ অঞ্চলের প্রাণীদের পক্ষে মেরু অঞ্চলের শীতল আবহাওয়া বাসোপযোগী নয়।

উষ্ণতার তারতম্যের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রকম উদ্ভিদ জন্মায়। যেমন: গ্রীষ্ণমণ্ডলে ধান, তুলো, তৈলবীজ, সেগুন, শাল প্রভৃতি উদ্ভিদ ও ফসল জন্মায়। আবার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে ওক, বীচ, গম, ওট প্রভৃতি উদ্ভিদ ও ফসল জন্মায়।

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের উষ্ণতার তারতম্যের জন্য মানুষের পোশাক, দেহের রঙ এবং খাবার-দাবারে পার্থক্য দেখা যায়। শীতপ্রধান দেশের লোকেরা ফর্সা হয় এবং ভারী পশমি বস্ত্র ব্যবহার করে। তুলনামূলক ভাবে, গ্রীষ্মপ্রধান দেশের লোকেরা অপেক্ষাকৃত কালো হয় এবং হালকা স্মৃতিবস্ত্র ব্যবহার করে।

Leave a reply