কৃষিকাজ
নেপাল একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এখানকার প্রায় ৯২% অধিবাসীই কৃষিজীবী। এই দেশের মোট আয়তনের ৮৮% পর্বতময় এবং ১২% সমভূমি। তরাই অঞ্চলের দক্ষিণাংশ এবং মধ্য উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত, মাঝারি উত্তাপ এবং উর্বর মৃত্তিকার জন্য প্রচুর ফসল উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ধান, পাট, তৈলবীজ, ডাল, কমলালেবু, আনারস উল্লেখযোগ্য। এছাড়া এই দেশে সামান্য পরিমাণ আখ, পাট, তামাক প্রভৃতি অর্থকরী ফসল উৎপন্ন হয়। প্রধানত কাঠমাণ্ডু উপত্যকা ও দক্ষিণের তরাই অঞ্চলে পাহাড়ে ধাপ কেটে চাষ করা হয়।
পশুপালন
এই দেশের পার্বত্য অঞ্চলের তৃণভূমিতে ছাগল, ভেড়া, ইয়াক এবং জো প্রতিপালন করা হয়।
শিল্প
এখানে পাট, চিনি, দেশলাই, রবারের জুতা, সিগারেট প্রভৃতি তৈরির কারখানা আছে। এখানকার প্রধান শিল্প হল পর্যটন শিল্প। হিমালয়ের সৌন্দর্য অবলোকনের জন্য এখানে পৃথিবীর নানা দেশের ভ্রমণকারীরা এসে থাকেন। এদের থাকা ও খাওয়ার জন্য এখানে নানা রকমের হোটেল-ব্যাবসা গড়ে উঠেছে।
ব্যাবসাবাণিজ্য
ভারত ও নেপাল বহুদিন থেকেই পরস্পরের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তিতে আবদ্ধ থাকায় উভয় দেশই উভয়কে নানারকম সুবিধা দিয়ে থাকে। বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য নেপালকে ভারতের কলকাতা বন্দর ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। নেপাল—চাল, ডাল, তৈলবীজ, পাট, কাঠ, চামড়া, ফল, সাবাই ঘাস, মশলা, পশম, বাদাম, চামড়া, রং ও সংস্কার করার দ্রব্য, চর্বি ইত্যাদি প্রায় ৩০-৩৫ কোটি টাকার জিনিস প্রতি বছর ভারতে রপ্তানি করে এবং ভারত থেকে কাপার্স-সুতা ও বস্ত্র, তৈলবীজ, তামাক, চা, ঔষধপত্র, লৌহ ও ইস্পাত, যন্ত্রপাতি, কাগজ ও বোর্ড, চুন, সিমেন্ট ও গৃহনির্মাণ সামগ্রী, ডাল, ময়দা, চিনি, বনস্পতি, জুতা, প্রভৃতি প্রায় ৬০ কোটি টাকার জিনিস আমদানি করে।
ভারতের সঙ্গে এই বাণিজ্য স্থলপথে রক্সৌল, যোগবানী ও বিরাটনগরের মারফৎ হয়। প্রধানত কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে জলপথে নেপালের বহির্বাণিজ্য সম্পন্ন হয়।
নেপালের পর্যটন শিল্প উন্নত কেন?
নেপালের প্রাকৃতিক দৃশ্য অতি মনোরম। নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডু শহরটি সুরম্য অট্টালিকা, বড়ো বড়ো রাজপথ, উদ্যান প্রভৃতির দ্বারা সুসজ্জিত। এখানকার পশুপতিনাথ মন্দির, ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়, দরবার গৃহ, নতুন বাজার, বৌদ্ধমন্দির দেখার জন্য দেশ বিদেশ থেকে বহু ভ্রমণকারী এসে থাকেন। ভাট গাঁও পুরাকীর্তির জন্য বিখ্যাত। নেপালের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর পোখরা থেকে হিমাদ্রীর তুষারাবৃত শৃঙ্গগুলির দৃশ্য অতি মনোরম এবং এগুলিও দেখার জন্য বহু বিদেশি ভ্রমণকারী ভিড় করেন। ভ্রমণকারীদের থাকা ও খাওয়ার জন্য এখানে নানারকমের হোটেল-ব্যাবসা গড়ে উঠেছে।
নেপালের প্রধান প্রধান রপ্তানি ও আমদানিকৃত দ্রব্য গুলির নাম করো। কোন দেশের সঙ্গে নেপালের বৈদেশিক বাণিজ্য বেশি হয়?
নেপালের প্রধান প্রধান আমদানিকৃত দ্রব্য হল কার্পাস-সুতা ও বস্ত্ৰ, তৈলবীজ, তামাক, চা, ঔষধপত্র, লৌহ ও ইস্পাত, যন্ত্রপাতি, কাগজ, বোর্ড, চুন, সিমেন্ট ও গৃহনির্মাণ সামগ্রী, ডাল, ময়দা, চিনি, বনস্পতি, জুতা প্রভৃতি।
নেপালের প্রধান প্রধান রপ্তানিকৃত দ্রব্য হল চাল, তৈলবীজ, পাট, কাঠ, চামড়া, ফল, সাবাই ঘাস, মশলা, পশম, মাখন, বাদাম, রং, চর্বি ইত্যাদি।
→ ভারতের সঙ্গে নেপালের বৈদেশিক বাণিজ্য বেশি হয়।
নেপালের শিল্পজাত দ্রব্যগুলি উল্লেখ করো।
পাট, চিনি, দেশলাই, রবারের জুতো, সিগারেট প্রভৃতি নেপালের উল্লেখযোগ্য শিল্পজাত দ্রব্য। নেপালের প্রধান শিল্প হল পর্যটন শিল্প। হিমালয়ের সৌন্দর্য অবলোকনের জন্য এখানে পৃথিবীর নানা দেশের ভ্রমণকারীরা এসে থাকেন। এদের থাকা ও খাওয়ার জন্য এখানে নানারকমের হোটেল-ব্যাবসা গড়ে উঠেছে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .