পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের সমভূমি অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি ও নদনদী
[১] অবস্থান ও বিস্তৃতি
তরাই-ডুয়ার্সের দক্ষিণে অবস্থিত এই অঞ্চলটি গঙ্গানদীর বাঁ-তীর পর্যন্ত বিস্তৃত। জলপাইগুড়ি জেলার দক্ষিণাংশ, উত্তরের সামান্য অংশ বাদে সমগ্র উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার ও মালদহ জেলা এই অঞ্চলের অন্তর্গত।
[২] ভূমিরূপ ও মৃত্তিকা
অনেকের মতে সমুদ্র থেকে বিচ্ছিন্ন কোন অগভীর হ্রদে, হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চল থেকে বয়ে আনা পলি সঞ্চয়ের ফলে এই অঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। মোটামুটিভাবে অঞ্চলটি সমতল হলেও মাঝে মাঝে এখানে-সেখানে খাল-বিল এবং উঁচু-নিচু জমি চোখে পড়ে। কোচবিহার ও মালদহ জেলায় এ ধরনের উঁচু-নিচু জমি বেশি দেখা যায়। দিনাজপুর জেলার দক্ষিণ অংশ এবং মালদহ জেলার পূর্বাংশ মোটামুটি অসমতল বা ঢেউখেলানো। ভূ- প্রকৃতিগত পার্থক্য অঞ্চলকে অনুসারে সমস্ত উত্তরের সমভূমি তিনভাগে ভাগ করা যায়, যথা : (১) তাল :
(কোচবিহার জেলার দক্ষিণতম অংশ এবং সমগ্র উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বিস্তৃত নিচু প্লাবনভূমি অঞ্চল); (২) বরেন্দ্রভূমি (মহানন্দা নদীর বাম তীরে অবস্থিত মালদহ ও দক্ষিণ-দিনাজপুর জেলার কিছুটা ঢেউখেলানো এবং খেজুরিয়াঘাট লাল রঙের, শক্ত, অনুর্বর, ল্যাটারাইট ও প্রাচীন পলিগঠিত পূর্বাংশ) এবং (৩) দিয়ারা (মালদহ জেলার কালিন্দী নদীর দক্ষিণাংশের নবীন পলিগঠিত উর্বর ও ঘনবসতিপূর্ণ ভূমি)।
[৩] নদ-নদী
এই অঞ্চলের উত্তরাংশে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা, রায়ডাকপ্রভৃতি পার্বত্য নদী চোখে পড়ে। এরা দক্ষিণ-পূর্ব বাহিনী হয়ে বাংলাদেশে ব্রহ্মপুত্রে মিশেছে। এই অঞ্চলের মধ্য ও দক্ষিণ অংশে মহানন্দা, নাগর, কালিন্দী, টাঙ্গন, পুনর্ভবা, আত্রাই প্রভৃতি নদীগুলো দেখা যায়।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .