পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চল
■[১] অবস্থান, বিস্তৃতি ও সীমা
পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম অংশে অবস্থিত এই ঢেউখেলানো মালভূমি অঞ্চলটি সমগ্র পুরুলিয়া জেলা এবং বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পশ্চিমাংশ নিয়ে গঠিত। প্রাচীন আগ্নেয় শিলাদ্বারা গঠিত এই অঞ্চলটি ছোটনাগপুর মালভূমির অংশবিশেষ।
→ পশ্চিমের ক্ষয়প্রাপ্ত মালভূমির পূর্ব দিকে পশ্চিমবঙ্গের রাঢ় অঞ্চল, পশ্চিমে ঝাড়খণ্ড রাজ্য, দক্ষিণ ও দক্ষিণ- পশ্চিমে ওড়িশা রাজ্য এবং উত্তর দিকে ঝাড়খণ্ড রাজ্য
অবস্থিত।
■[২] ভূমিরূপ
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের এই মালভূমি অঞ্চলটি ক্ষয় পেয়ে সমপ্রায় ভূমিতে পরিণত হয়েছে এবং অপেক্ষাকৃত কঠিন শিলার দ্বারা গঠিত এই মালভূমির বাকি অংশগুলো টিলার মত ছোট ছোট পাহাড়ের আকারে এখানে ওখানে দাঁড়িয়ে আছে। এদের মধ্যে পুরুলিয়া জেলার অযোধ্যা, বাঘমুণ্ডি ও পাঞ্চেৎ, বাঁকুড়ার বিহারীনাথ ও শুশুনিয়া, বীরভূমের মামা-ভাগ্নে পাহাড় প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। অযোধ্যা পাহাড়ের গোগরাবুরু (উচ্চতা ৬৭৭ মিটার) পশ্চিমবঙ্গের মালভূমি অঞ্চলের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।
■ [৩] মৃত্তিকা
পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলটি প্রধানত খুব প্রাচীন গ্রানাইট ও নাইস্ শিলায় গঠিত। এছাড়া মালভূমি অঞ্চলে ইটের মত লাল ও কাঁকরময় ল্যাটারাইট মৃত্তিকা দেখা যায়। ল্যাটারাইট মাটিতে জৈব পদার্থ এবং কাদার ভাগ কম থাকার জন্য খুবই অনুর্বর হয়। অনুর্বর ল্যাটারাইট মৃত্তিকার জন্য নদীর তীরবর্তী অঞ্চল ছাড়া সাধারণভাবে পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চল কৃষিকাজে উন্নত নয়।
■ [৪] নদ-নদী
অজয়, দামোদর, ময়ূরাক্ষী, সুবর্ণরেখা, শিলাই এবং কংসাবতী পশ্চিমবঙ্গের মালভূমি অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য নদী। সুবর্ণরেখা নদী এই মালভূমি অঞ্চলকে রাঁচি মালভূমি থেকে আলাদা করেছে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .