সক্রিয় বদ্বীপ অঞ্চল বলতে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত সুন্দরবন অঞ্চলকেই বোঝায়। সুন্দরবন, অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের সক্রিয় বদ্বীপ অঞ্চলের প্রধান নদনদীগুলির মধ্যে বিদ্যাধরী, পিয়ালী, মাতলা, গোসাবা, ইছামতী, সপ্তমুখী, ঠাকুরূণ, হাড়িয়াভাঙা, রায়মঙ্গল, কালিন্দী প্রভৃতি নদী প্রধান। এই নদীগুলোর সঙ্গে উত্তর থেকে বয়ে আসা নদীর কোনো যোগাযোগ নেই বললেই চলে। ফলে নদীগুলো জোয়ারের জল পেয়ে জীবন্ত হয়ে ওঠে এবং ভাঁটার টানে শুকিয়ে যায়। সমুদ্রের পলি ও বালি জমে গিয়ে নদীগুলো অনেকটা ভরাট হয়ে গেছে, তাই এই নদীগুলির মধ্য দিয়ে নৌকা চলাচলের অসুবিধা হয়।
পশ্চিমবঙ্গের সক্রিয় বদ্বীপ অঞ্চলের নদনদীর বৈশিষ্ট্য
পশ্চিমবঙ্গের সক্রিয় বদ্বীপ অঞ্চলের নদীগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হল:
(১) বহু নদনদী বিভিন্ন শাখা প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের সক্রিয় বদ্বীপ অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে;
(২) এই নদীগুলো প্রধানত জোয়ারের জলে পুষ্ট;
(৩) নদীগুলোর জল লবণাক্ত;
(৪) এই নদীগুলো দৈর্ঘ্যে ছোটো;
(৫) প্রায় প্রতিটি নদীই খাল দ্বারা পরস্পর সংযুক্ত ;
(৬) জোয়ারের সময় সক্রিয় বদ্বীপ অঞ্চলের এই নদীগুলোতে মোহনা থেকে উৎসের দিকে জল প্রবাহিত হয় এবং ভাটার সময় নদীর জল মোহনার দিকে নেমে যায়;
(৭) এক সময় এই নদীগুলোর সঙ্গে ভাগীরথী-হুগলি নদী বা গঙ্গার সংযোগ ছিল। কিন্তু বর্তমানে এই সংযোগ অনেকাংশেই বিচ্ছিন্ন হয়ে খাঁড়িতে পরিণত হয়েছে;
(৮) এই খাঁড়িগুলো সমুদ্রোপকূলের কাছে বেশ চওড়া;
(৯) এই খাঁড়িগুলোতে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়;
(১০) এই নদীগুলো প্রকৃতিতে খুবই সক্রিয়। তাই এই নদীগুলো ডাটার সময় বিপুল পরিমাণে পলি, বালি প্রভৃতি অবক্ষেপণ করে মোহনার কাছে বদ্বীপ সৃষ্টি করে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .