গান্ধার শিল্পের বৈশিষ্ট্য
গান্ধার শিল্পরীতির উৎপত্তিস্থল ছিল তৎকালীন গান্ধার (বর্তমানের পেশোয়ার) অঞ্চলে।
(১) গ্রিক শিল্পরীতির পেশিবহুল গঠনভঙ্গি ও কোঁকড়ানো চুলের সঙ্গে ভারতীয় রীতির স্থিমিত লোচন ও আত্মমোহিত ভাবের সংমিশ্রণ ছিল গান্ধার শিল্পরীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য।
(২) মানুষের যথার্থ প্রতিকৃতি নির্মাণ করার কৌশল এই শিল্পরীতিতে সর্বদা প্রাধান্য পেত।
(৩) বুদ্ধমূর্তি ও বৌদ্ধধর্মকে আশ্রয় করে গ্রিক-প্রভাবিত এই শিল্পরীতির বিদেশি আঙ্গিক এক অপূর্ব শিল্প-সুষমা লাভ করেছিল, যদিও ভারতীয়রা তা প্রসন্ন মনে গ্রহণ করেনি।
(৪) গান্ধার শিল্প মূর্তিগুলোর অবয়ব গঠনের সময় গ্রিক শিল্পশৈলী অনুসরণ করা হলেও ভারতীয় ভাবাদর্শ মেনেই মূর্তি নির্মাণ করা হত।
(৫) পরিশেষে বলা যায়, আধুনিক শিল্পকলা সমালোচকদের মতে গান্ধার শিল্প অনেকটাই ছিল যান্ত্রিক ও নিষ্প্রাণ। কিন্তু তা হলেও এই শিল্পরীতির প্রাচীন ভারতের শিল্পকলায় এক নতুন আঙ্গিকের সংযোজন ঘটিয়েছিল।
কণিষ্কের আমলে গান্ধার শিল্পের চরম অগ্রগতি ঘটে। মথুরা, অমরাবতী, সাঁচি, সারনাথ ও ভাবরহূত শিল্পকলা গান্ধার শিল্পের প্রভাবে কণিষ্কর সময় পরিণত রূপ লাভ করে। বৌদ্ধ সংস্কৃতিও গান্ধার শিল্পের প্রভাবে অতি উৎকর্ষ লাভ করে। চিন, তিব্বত, মঙ্গোলিয়া, কোরিয়া, জাপান, মধ্য-এশিয়া প্রভৃতি স্থানে কনিষ্কর উদ্যোগে গান্ধার শিল্প জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .