মৌর্য যুগের শিল্প ভাস্কর্য
মৌর্য যুগের ভাস্তর্য শিল্পের মধ্যে পাটলিপুত্র রাজপ্রাসাদের ভগ্নাবশেষ, সারনাথের একাশলা ভেষ্টনী, বুদ্ধগয়ার বোধিমন্ডল, গয়া জেলার বারাবার এবং নাগার্জুন পাহাড়ের বিভিন্ন গুহাবাস ও স্তম্ভ এবং ওড়িশার ধৌলি পাহাড়ের খোদাই করা হাতির মুখের সামনের অংশ বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
মৌর্য যুগের এইসব শিল্পসম্ভারগুলো সবই সম্রাট অশোক ও তাঁর পৌত্র দশরথের আমলে তৈরি হওয়ায় এগুলির ওপর তাঁদের উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে। এছাড়া, মৌর্যযুগের শিল্পগুলোর মধ্যে গ্রিক ও পারসিক প্রভাবও অস্বীকার করা যায় না।
মৌর্য শিল্পের বিবরণ
সম্রাট অশোকের আমলে ৮৪০০০ স্তুপ, অসংখ্য স্তম্ভ, বৌদ্ধ ও আজীবক সন্ন্যাসীদের তৈরী গুহা, চৈত্য, প্রাসাদ, প্রভৃতির স্থাপত্য-ভাস্কর্য, কারুকার্য এককথায় অনুপম। পাথরের স্তম্ভগুলি ছিল অতি মসৃণ। সাঁচি, সারনাথ, এলাহাবাদ, ননন্দগড়, রুম্মিনদেই প্রভৃতি স্থানে বহু কারকার্যময় স্তম্ভ পাওয়া গেছে। সারনাথের অশোকস্তম্ভের শীর্ষদেশে ‘সিংহের মূর্তি’ ও ‘অশোকচক্র’আজও বিস্ময়ের উদ্রেক করে। এছাড়া বেসনগরের গরুড় স্তম্ভ ও ভারত্বতের স্তম্ভ এবং পাটলিপুত্র দুর্গের প্রাচীরের চারদিকে কারুকার্যময় ৬৪টি সিংহদুয়ার ৫৭০টি কোরণ মৌর্য শিল্পের সমৃদ্ধির এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। বিভিন্ন গুহার মধ্যে নাগার্জুন গুহা, দশরথ গুহা, সুদাম গুহার দেয়ালগুলি ঝকঝকে আয়নার মতো মসৃণ ছিল। স্তম্ভগুলি সবচেয়ে বড়োটির উচ্চতা প্রায় ৫০ ফুট। বহু স্তম্ভের শীর্ষে পাথরের সিংহ, অশ্ব, হস্তী, বৃষ প্রভৃতি জীবজন্তুর মূর্তি খোদাই করা ছিল। পাটনার সন্নিকটে কুমারহারে ৮০টি স্তম্ভযুক্ত একটি হলঘর পাওয়া গেছে। লোরিয়া নন্দনগড় ও ওড়িশার ধৌলীপাহাড়ের ইস্তীমূর্তিটি স্থাপত্য শিল্পের এবং বিরল দৃষ্টান্ত। গোরিয়া নন্দনগড়ের স্তম্ভে আহাররত এক সুন্দর রাজহংসের মূর্তি আছে? যা আজও বিস্ময়ের সৃষ্টি করে থাকে।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .