বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব
ভারতীয় সভ্যতায় বহুমুখী প্রভাব ফেলেছে বৌদ্ধধর্ম।
প্রথমতঃ
বুদ্ধদেবই বিশ্ব-ইতিহাসে সর্বপ্রথম জীবের মুক্তির কথা ঘোষণা করেন।
দ্বিতীয়তঃ
বৌদ্ধ ধর্ম জন্মভিত্তিক বর্ণভেদের বিরোধিতা করে সামাজিক সাম্যের বাণী প্রচার করে।
তৃতীয়তঃ
বৌদ্ধ ধর্ম সুদে ঋণগ্রহণ ও সমুদ্র যাত্রা অনুমোদন করে বাণিজ্য বিকাশের পথ অনুমোদন করেছিল।
চতুর্থতঃ
বাণিজ্যের বিকাশ নতুন নতুন নগরের সৃষ্টি করে। তার ফলে বিকশিত হয় নাগরিক-সভ্যতা।
পঞ্চমতঃ
বৌদ্ধ ধর্ম ও এক যুক্তিবাদী মানসিকতার জন্ম দেয়।
ষষ্ঠতঃ
বৌদ্ধবিহার মঠ নির্মাণ এবং বৌদ্ধ মূর্তি নির্মাণ যথাক্রমে স্থাপত্য শিল্প ও ভাস্কর্য শিল্পকে বিশেষ মর্যাদা দান করে।
সপ্তমতঃ
বৌদ্ধধর্ম শিক্ষাকে সংগঠিত গণ-শিক্ষায় উন্নীত করে। যথার্থই বৌদ্ধ শিক্ষায়তনগুলি সমকালে, ভারত ও এশিয়ার মধ্যে সাংস্কৃতিক যোগসূত্র স্থাপন করেছিল। বর্তমান পৃথিবীতে প্রচারিত ধর্মের মধ্যে বৌদ্ধধর্ম অন্যতম আন্তর্জাতিক ধর্মরূপে চিহ্নিত।
বৌদ্ধ ধর্মের সাফল্যের কারণ
বৌদ্ধ ধর্মের সাফল্যের কারণগুলি হল:
১) এই ধর্মের সাফল্যের অন্যতম কারণ বুদ্ধদেবের ব্যক্তিত্ব ও অসামান্য চারিত্রিক প্রভাব। তার সহজ, সরল, পবিত্র মাধুর্যময় ব্যবহার সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করত। ঐতিহাসিক ডুরান্টের মতে তিনি ছিলেন আত্মবিশ্বাসী, বিনয়ী ও মৃদু ভাষী।
২) বৈদিক ধর্মের ব্যর্থতার সুযেগে বৌদ্ধধর্মের প্রসার ও সাফল্য লাভ ঘটে। সে সময় ভারতের এক বিশাল অঞ্চলে বৈদিকধর্মের অনুপ্রবেশ না ঘটায় সেই সকল স্থানে বৌদ্ধ ধর্ম খুব সহজেই প্রবেশ করতে পারে।
৩) ভাষা হল এমন একটি মাধ্যম যা যে কোনও জিনিসকে জনপ্রিয় বা অসফল করে তুলতে পারে। এক্ষেত্রে বৌদ্ধধর্মের ভাষা ছিল । পালি ভাষা সকলের পরিচিত ছিল। তার ফলে সাধারণ মানুষ খুব সহজেই বৌদ্ধ ধর্ম অনুধাবন করতে পেরেছিল।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .