Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

দ্বিতীয় আফিম বা অহিফেন যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো।

দ্বিতীয় আফিম বা অহিফেন যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল

প্রথম অহিফেন যুদ্ধে পরাজয়ের ফলে চিনের দুর্বলতা সর্বসমক্ষে প্রকাশিত হয়ে পড়ে। নানকিং ও অপরাপর সন্ধির দ্বার ইউরোপীয় বণিকরা নানা সুযোগ-সুবিধা লাভ করলেও তারা আরও সুযোগ লাভের জন্য আগ্রহী ছিল। তাদের অভিযোগ ছিল। যে, চিন সরকার নানকিং সন্ধির সর্তাবলী সঠিকভাবে পূরণ করছে না। তারা যুদ্ধের সুযোগ খুঁজছিল। এ সময় দুটি সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু-পক্ষে যুদ্ধ বেধে যায়।

(১) চ্যাপডেলেন নামক জনৈক ফরাসী ধর্মযাজক চীন সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ প্রচারের অভিযোগে ধৃত হলে, চিনা বিচারকরা ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করেন। এই ঘটনায় ফরাসীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠে।

(২) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে আফিমের চোরাচালানে লিপ্ত ‘লরচা অ্যারো’ নামে ব্রিটিশ পতাকাবাহী একটি জাহাজ ধরা পড়ে। জাহাজটি বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং এর নাবিকরাও শাস্তি পায়। এতে ব্রিটিশ সরকার প্রবল ক্ষুদ্ধ হয় এবং চিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে (১৮৫৬ খ্রিঃ)। ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের সঙ্গে যোগ দেয়। এই যুদ্ধ দ্বিতীয় অহিফেন যুদ্ধ (১৮৫৬-৫৮ খ্রিঃ) নামে পরিচিত। দুটি সামান্য ঘটনাকে উপলক্ষ করে যুদ্ধ শুরু হলেও এর মূল কারণ ছিল পাশ্চাত্য শক্তির বর্গের সাম্রাজ্যবাদী লালসা।

পরাজিত চিন সরকার ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের সঙ্গে টিয়েনসিনের সন্ধি (১৮৫৮ খ্রিঃ) স্বাক্ষরে বাধ্য হয়। সন্ধির শর্তানুসারে (১) চীন সরকার ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সকে প্রচুর ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হয়। (২) চিনের আরও এগারটি বন্দর বিদেশী বণিকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। (৩) রাজধানী পিকিং -এ (বর্তমান বেইজিং) বিদেশী দূতাবাস স্থাপন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। (৪) ছাড়পত্রের মাধ্যমে বিদেশীরা চিনের অভ্যন্তরে অবাধে ভ্রমণ করার ও খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারকরা বসবাসের অনুমতি পায়। (৫) বিদেশী বণিকদের সুবিধার্থে বাণিজ্য শুল্ক হ্রাস করা হয়। (৬) নির্দিষ্ট শুল্কের বিনিময়ে চিনে আফিমের ব্যবসা বৈধ বলে স্বীকৃত হয়। (৭) চিনের অভ্যন্তরে বিদেশী বণিকদের অতি-রাষ্ট্রিক অধিকার স্বীকৃত হয়। একথায়, চীন সাম্রাজ্যের দুর্দশার আর সীমা-পরিসীমা রইল না। চিন সম্রাট এই চুক্তি অনুমোদনে টালবাহান করলে অবস্থা ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে এবং শেষ পর্যন্ত ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে পিকিং-এর সন্ধি দ্বারা আরও বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা দিয়ে চিন ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে প্রাচীন সভ্যতার লীলাভূমি চিন পশ্চিমের কাছে পুরোপুরি পরাজিত ও অপমানিত হয়েছিল।

Leave a reply