স্থীতিশীল উন্নয়নের ধারণা
প্রথমত, শিল্পবিপ্লবের পর থেকে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে যে প্রাকৃকি পদগুলির উপর ভিত্তি করে, সেগুলির যোগান অফুরন্ত নয়। যেমন কয়লা, খনিজ তেল ইত্যাদি।
দ্বিতীয়ত, আধুনিক যুগে যত কলকারখানা তৈরি হয়েছে, তার ফলে পরিবেশ যথেষ্ট দূষিত হয়েছে।
তৃতীয়ত, শুধুমাত্র মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতির কথা মাথায় রেখে এখনও পর্যন্ত সমস্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করাহয়েছে। যে অঞ্চলের জন্য পরিকল্পনা, সেই একার নিজস্ব পরিবেশের ভাল-মন্দ বিচার করা হয় নি। তার ফলও সর্বদা ভাল হয় নি।
চতুর্থত, কৃষির উন্নতির জন্য নভূমি নষ্ট হয়েছে।
পঞ্চমত, নগরায়নের জন্য কৃষিজমি ও জলাজমি নষ্ট হয়েছে।
ষষ্ঠত, মানুষের মধ্যে সম্পদ অপচয় করার প্রবণতা বেড়েছে।
সপ্তমত, আধুনিক উন্নয়ন ব্যবস্থা শোষণ বৃদ্ধি করেছে। ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে অর্থনৈতিক বিভাজন তৈরি করেছে। পৃথিবীর দেশগুলি “উন্নত” এবং “উন্নয়নশীল”—এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। প্রকৃতপক্ষে এই অবস্থা সামগ্রিকভাবে মানুষের উন্নয়নের স্থায়ী করে না।
সেই কারণে ১৯৭২ সলে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে রাষ্ট্রসংঘের “মানব পরিবেশ” শীর্ষক সম্মেলনে পরিবেশ ও উন্নয়নের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে দোলার জন্য বিশ্বের সব দেশগুলিকে আহ্বান জানানো হয়। এরপর ১৯৮০ সালে IUCN তাঁদের “ওয়ার্লড্ক নজারভেশন স্ট্র্যাটেজি” নামক প্রতিবেদনে স্থিতিশীল বা স্থায়ী উন্নয়নের তত্ত্ব (Sustainable Development) প্রকাশ করেন। এবং ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও-ডি-জেনিরো শহরে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রসংঘের “বসুন্ধরা সম্মেলন”-এ স্থিতিশীল বা স্থায়ী উন্নয়নের রূপায়ণ সংক্রান্ত কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। এই কর্মসূচী “এজেন্ডা-২১” নামে বিখ্যাত। এখানে উল্লেখ করা যায় যে, ৯-এর দশককে রাষ্ট্রসংঘ স্থিতিশীল বা স্থায়ী উন্নয়নের দশক হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .