দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দক্ষিণ এশিয়ার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হলাে South Asian Association for Regional Co-operation বা SAARC। এর সদস্য রাষ্ট্র ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ এবং আফগানিস্তান।
সার্ক-এর প্রেক্ষাপক্ষ
1985 খ্রিঃ বাংলাদেশের ঢাকায় গড়ে ওঠা সার্কের প্রতি প্রেক্ষাপট ছিল নিম্নরূপ-
জিয়াউর রহমান এবং শ্রীলঙ্কা সফর
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে পারস্পরিক সহযােগিতার পথ গড়ে তােলার উদ্যোগ শুরু হয় বাংলাদেশ-এর রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শ্রীলঙ্কা সফরে। কারণ তিনি এই দু’টি দেশের পারস্পরিক সহযােগিতার উদ্দেশ্যে আঞ্চলিক সংস্থা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন।
» সার্ক গঠনের সিদ্ধান্ত
মূলত নির্দিষ্ট কিছু প্রয়ােজনীয়তাকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক পর্যায়ে আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি নিয়ে সার্ক গঠন করা হয়।
» সদস্য রাষ্ট্র
সার্ক নামক সংগঠনটির সদস্য রাষ্ট্রগুলি হলাে – ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ এবং আফগানিস্তান। এছাড়া স্থির হয় এই সংস্থার সদর দপ্তর হবে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে।
» সার্ক-এর প্রতিষ্ঠা
উপরের আলােচিত বিষয়গুলির দিকে নজর রেখে 1983 খ্রিঃ দিল্লি সম্মেলন-এ জন্ম হয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার আঞলিক সংস্থা সার্কের। শেষ পর্যন্ত 1885 খ্রিঃ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই সংস্থা। গঠনের প্রস্তাব অনুমােদিত হয়।
সার্ক গঠনের লক্ষ্য/উদ্দেশ্য
সার্ক গঠনের মূল উদ্দেশ্যগুলি ছিল—
(i) উন্নয়ন : দক্ষিণ এশিয়ার অন্তর্ভুক্ত রাষ্ট্রগুলির আর্থ-সামাজিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধি করা।
(ii) আত্মনির্ভরতা : সার্কের অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি রাষ্ট্রের স্বাধীনতা রক্ষা এবং রাষ্ট্রগুলির আত্মনির্ভরশীল শক্তি বৃদ্ধি করা।
(iii) উৎসাহ প্রদান : অর্থনৈতিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার সক্রিয় সহযােগিতার বিষয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলিকে উৎসাহিত করা।
(iv) জনকল্যাণ : দক্ষিণ এশীয় রাষ্ট্রগুলির জনসাধারণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা।
(v) বােঝাপড়া : সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে পারস্পরিক সাহায্যের দ্বারা নিজেদের আর্থিক বিকাশ এবং সামাজিক উন্নয়ন ঘটানাে।
(vi) হস্তক্ষেপ না করা : প্রতিটি রাষ্ট্রের ভৌগােলিক সীমানা রক্ষা করা এবং অন্যান্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা।
(vii) নিরাপত্তা রক্ষা : সার্কের অন্তর্ভুক্ত রাষ্ট্রগুলি নিজ নিজ রাষ্ট্র এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির নিরাপত্তা রক্ষা করতেও তৎপর থাকবে বলে স্থির হয়।
মন্তব্য
ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধি বলেছিলেন সার্ক দঃ এশিয়া অঞ্চলে তার সদস্য রাষ্ট্রগুলির আত্মনির্ভরতা, সমস্যা সমাধান, দারিদ্র্য দূরীকরণ, সাক্ষরতার প্রসার, অপুষ্টি ও রােগ দূরীকরণের সাথে যুক্ত।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .