সমোষ্ণরেখা
ভূ-পৃষ্ঠে যেসব জায়গায় বছরের একই সময় (সাধারণত জানুয়ারি ও জুলাই মাসে) গড় উষ্ণতা একই রকম থাকে, মানচিত্রে সেইসব জায়গাকে পরপর যোগ করে যে কাল্পনিক রেখা টানা হয়, তাকে সমোষ্ণ রেখা বলে। অর্থাৎ যে কাল্পনিক রেখা দিয়ে বছরের একই সময়ে একই উষ্ণতাবিশিষ্ট স্থানগুলিকে যোগ করা হয় তাকে সমোষ্ণ রেখা বলে।
উচ্চতার পার্থক্যের জন্য উষ্ণতার তারতম্য ঘটে, তাই পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের উষ্ণতাকে সমুদ্র সমতলের উচ্চতায় পরিবর্তিত করে সমোষ্ণ রেখাগুলো টানা হয়। সাধারণত জানুয়ারি ও জুলাই মাসেই উষ্ণতার চরম ভাব দেখা যায় বলে জানুয়ারি ও জুলাই মাসের গড় উষ্ণতার ভিত্তিতে সমোষ্ণ রেখাগুলো আঁকা হয়। এছাড়া দৈনিক গড় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রাকে অনুসরণ করেও সমোষ্ণ রেখা আঁকা হয়ে থাকে।
সমোষ্ণরেখার বৈশিষ্ট্য :
(১) সমোষ্ণ রেখাগুলো অনেকটা অক্ষরেখার মতো এবং এরা বিভিন্ন অক্ষরেখার প্রায় সমান্তরালে পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত, কারণ একই অক্ষরেখা বরাবর সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল প্রায় সমান হয়।
(২) উচ্চ অক্ষাংশের তুলনায় নিম্ন অক্ষাংশে সমোষ্ণ রেখাগুলোর মান বেশি হয়।
(৩) উত্তর গোলার্ধের তুলনায় দক্ষিণ গোলার্ধে সমোষ্ণ রেখাগুলোর মধ্যে ব্যবধান বেশি। কারণ : দক্ষিণ গোলার্ধে জলভাগ বেশি থাকার জন্য এক বিরাট অঞ্চলে উষ্ণতা প্রায় সমান থাকে।
(8) স্থলভাগ ও জলভাগের মধ্যে উষ্ণতার তারতম্যের ফলে স্থলভাগ ও জলভাগের মিলনস্থলে সমোষ্ণরেখাগুলো একটু বেঁকে যায়।
(৫) সমোষ্ণ রেখাগুলো সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সঙ্গে সঙ্গে যথাক্রমে উত্তর ও দক্ষিণ দিকে সরে যেতে থাকে।
(৬) সমোষ্ণ রেখাগুলোর সাহায্যে পৃথিবী পৃষ্ঠে উষ্ণতার বন্টন সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।
সমোষ্ণরেখার গুরুত্ব
সমোষ্ণ রেখার মানচিত্রের সাহায্যে পৃথিবীর নানা স্থানে উষ্ণতার বিস্তৃতি সম্বন্ধে ধারণা করা যায়।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .