Register Now

Login

Lost Password

Lost your password? Please enter your email address. You will receive a link and will create a new password via email.

Captcha Click on image to update the captcha .

Add question

ষােড়শ মহাজনপদ বলতে কী বােঝায়?

ষােড়শ মহাজনপদ বলতে কী বােঝায়?

এক সময় মনে করা হতাে যে আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমণের (৩২৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) পূর্বে নির্দিষ্ট সন-তারিখ সহ ভারতের ইতিহাস রচনা করা অসম্ভব। কিন্তু পরবর্তীকালে বিভিন্ন ইতিহাসবিদের অদম্য চেষ্টায় খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে উত্তর ভারতের ধারাবাহিক রাজনৈতিক ইতিহাস মােটামুটি স্পষ্টভাবে জানা সম্ভব হয়েছে। ইতিহাসবিদ ড, এ. এল, বাসাম মন্তব্য করেছেন যে এই সময় থেকে ভারতের ইতিহাস তার অতীত অনিশ্চয়তা কাটিয়ে নতুন আলােতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে।

ষােড়শ মহাজনপদ

ষােড়শ মহাজনপদের উত্থান

বৌদ্ধগ্রন্থ ‘অঙ্গগুত্তরনিকায়’, জৈনগ্রন্থ ভগবতীসূত্র’, হিন্দু পুরাণ প্রভৃতি থেকে জানা যায় যে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে উত্তর ভারতে কোনাে ঐক্যবদ্ধ কেন্দ্রীয় শক্তির অস্তিত্ব ছিল না। উক্ত সাহিত্যিক উপাদানগুলি থেকে এই সময় উত্তর ভারতে ষােলােটি ছােটো রাজ্যের অস্তিত্বের কথা জানা যায়। এই ষােলােটি ক্ষুদ্র রাজ্যকে একত্রে ষােড়শ মহাজনপদ বলা হয়। সােড়শ মহাজনপদের মধ্যে উত্তর ভারতে পনেরােটি এবং দক্ষিণ ভারতে একটি রাজ্যের উত্থান ঘটেছিল।

ষােড়শ মহাজনপদের পরিচয়

যােড়শ মহাজনপদের রাজ্যগুলির অবস্থান ছিল আফগানিস্তানের কাবুল থেকে দক্ষিণ ভারতের গােদাবরী নদীর উপকুলের মধ্যবর্তী অলে। রাজ্যগুলি হলাে-

(1) কাশী : রাজ্যটির অবস্থান ছিল বর্তমান উত্তরপ্রদেশের পূর্বদিকে।

(2) কোশল : এর অবস্থান ছিল বর্তমান অযােধ্যা বা শ্রাবস্ত

(3) অঙ্গ : এর অবস্থান ছিল বর্তমান পূর্ব বিহার। এই রাজ্যের রাজধানী ছিল চম্পা।

(4) মগধ : মগধের অবস্থান ছিল বর্তমান বিহারের গয়া ও পাটনা জেলা। এর প্রথম রাজধানী ছিল গিরিব্রজ বা রাজগৃহ পরে পাটলিপুত্রে রাজধানী স্থানান্তরিত হয়।

(5) অবন্তী : এর অবস্থান ছিল বর্তমান মালব ও মধ্যপ্রদেশের কিছু অংশে। এর উত্তরাংশের রাজধানী ছিল উজ্জয়িনী ও দক্ষিণাংশের রাজধানী ছিল মাহিস্মতি।

(6) বৎসঃ : এর অবস্থান ছিল বর্তমান এলাহাবাদের নিকটবর্তী গঙ্গার দক্ষিণ তীরে। এর রাজধানী ছিল কৌশাম্বী।

(7) বৃজি : এর অবস্থান ছিল বর্তমান উত্তর বিহারে। এর রাজধানী ছিল বৈশালী।

(8) মল্ল : এর অবস্থান ছিল বর্তমান উত্তরপ্রদেশের গােরক্ষপুর জেলা। এর রাজধানী ছিল কোশীনগর বা পাবা।

(9) কুরু : এর অবস্থান ছিল বর্তমান দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী অঞল। এর রাজধানী ছিল ইন্দ্রপ্রস্থ।

(10) পাঞাল : এর অবস্থান ছিল বর্তমান রােহিলাখণ্ড। উত্তর পাঞ্জালের রাজধানী ছিল অহিচ্ছত্র এবং দক্ষিণ পালের রাজধানী ছিল কাম্পিল্য।

(11) চেদি : এর অবস্থান ছিল বর্তমান বুন্দেলখণ্ড ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল। এর রাজধানী ছিল শুকতিমতি।

(12) মৎস্য : এর অবস্থান ছিল বর্তমান রাজপুতানার জয়পুর। এর রাজধানী ছিল বিরাটনগর।

(13) শুরসেন : এর অবস্থান ছিল যমুনা নদীর তীরে মথুরা অঞ্চল। এর রাজধানী ছিল মথুরা।

(14) অস্মক : এর অবস্থান ছিল বর্তমান গােদাবরী উপত্যকা অঞ্চল বা পাটলি। এর রাজধানী ছিল পােটালি বা পােটান।

(15) গান্ধার : এর অবস্থান ছিল বর্তমান রাওয়ালপিণ্ডি বা তক্ষশিলা ও কাশ্মীর উপত্যকা। এর রাজধানী ছিল তক্ষশিলা।

(16) কম্বােজ : এর অবস্থান ছিল বর্তমান দক্ষিণ-পশ্চিম কাশ্মীর। এর রাজধানী ছিল রাজপুর।

উপসংহার

ঘােড়শ মহাজনপদের রাজ্যগুলি পরস্পরের বিরুদ্ধে সর্বদা সংঘর্ষে লিপ্ত থাকত এবং নিজেদের শক্তি ক্ষয় করত। শেষপর্যন্ত অধিকাংশ রাজ্যকে পরাজিত করে মগধ উত্তর ভারতে একটি কেন্দ্রীয় রাজশক্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। এজন্য ইতিহাসবিদ ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার এই যুগকে ‘রাজকীয় ঐক্যের যুগ’ বা ‘The Age of Imperial Unity’ বলে অভিহিত করেছেন।

Download PDF

Please wait..
If the download didn’t start automatically, click here.

Leave a reply