রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞাগুলিকে ঐতিহ্যবাহী ও আধুনিক এই দুইভাগে ভাগ করা যায়। সাবেকী রাষ্ট্রবিজ্ঞানি গাণানের মতে, রাষ্ট্রকে নিয়েই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শুরু ও সমাপ্তি। ব্লুন্টসলি রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে রাষ্ট্রের বিজ্ঞান বলে অভিহিত করেছেন। আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানি রবার্ট ডাল ও লাসওয়েল রাজনীতিকে প্রভাব ও প্রভাবশালীদের পর্যালোচনারূপে উল্লেখ করে রাজনৈতিক ক্ষমতাকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু করতে চেয়েছেন। মার্কসবাদী রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে সমাজের শ্রেণিসম্পর্ক ও শ্রেণিসংগ্রাম সম্পর্কিত বিচার বিশ্লেষণ হল রাষ্ট্রবিজ্ঞান। তবে বিবর্তনের সাথে সাথে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মধ্যে অনেক বিষয় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। তাই অ্যান্ডারসন মন্তব্য করেন— রাষ্ট্রবিজ্ঞানে কোনো সংক্ষিপ্ত ও সুনির্দিষ্ট সীমা নির্দেশ করা সম্ভব নয়।
আধুনিক ধারণা
আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান রাষ্ট্র ব্যতীত বেসরকারী প্রতিষ্ঠান কোন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যকলাপ ও আচার-আচারণ, চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দল নিয়ে আলোচনা করে। ঈস্টনের মতে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান হল ‘ক্ষমতার বন্টন ও ব্যবহারের দ্বারা প্রভাবিত মূল্যের কর্তৃত্ব সম্পন্ন বন্টনের আলোচনা।’ অ্যালান বলের মতে, সমাজের বিরোধ, বিরোধ মীমাংসা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের আলোচনা করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান।
সর্বজনগ্রাহ্য সংজ্ঞা
বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সজ্ঞা ও উপরিউক্ত বিভিন্ন আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি সর্বজনগ্রাহ্য সংজ্ঞা হল – রাষ্ট্রবিজ্ঞান হল একটি সামাজিক বিজ্ঞান যেখানে রাষ্ট্র ও রাজনীতির দার্শনিক, প্রশাসনিক প্রসঙ্গ, সাংগঠনিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন ও সাংগঠনিক সম্পর্কের প্রসঙ্গ এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থায় তুলনামূলক বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা।
Leave a reply
You must login or register to add a new comment .